ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাহসী এক চিঠি বদলে দিল বৈশ্বিক বাণিজ্যের সম্ভাব্য বিপর্যয়ের গতিপথ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে যখন বিশ্ব অর্থনীতি কাঁপছিল, তখন বাংলাদেশের গর্ব, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক জোরালো পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসেন। তাঁর সাহসী চিঠি বিশ্ব বাণিজ্যে সম্ভাব্য বিপর্যয়ের গতিপথ বদলে দেয়।

ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশ সহ বেশ কয়েকটি দেশের উপর ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ শুল্ক ছিল বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ৩৭ শতাংশ এবং ভারতের উপর ২৭ শতাংশ । এই পদক্ষেপ বিশ্ব বাণিজ্যকে চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন যে প্রতিশোধমূলক শুল্কের এই ধারা অব্যাহত থাকলে বিশ্ব নতুন করে মহামন্দার মুখোমুখি হতে পারে।

এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ড. ইউনূস সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। তিনি অনুরোধ করেছিলেন যে কমপক্ষে তিন মাসের জন্য অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার করা হোক।

চিঠি পাঠানোর মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে একটি অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া আসে। ট্রাম্প তার নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ঘোষণা করেন যে চীন ছাড়া অন্যান্য দেশের উপর অতিরিক্ত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের পূর্ববর্তী সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নও প্রতিক্রিয়ায় ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ঘোষণার পর, ইইউও ৯০ দিনের জন্য পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা স্থগিত করে। এর সাথে সাথে, তারা পারস্পরিক শুল্কের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

ড. ইউনূসের চিঠির প্রভাব ভারতের উপরও পড়েছে। ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্কও কমানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুঝতে পেরেছেন যে এই জাদুকরের প্রভাব কতটা গভীর।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে, শীর্ষ সাতটি প্রযুক্তি কোম্পানির বাজার মূল্য একদিনে এক ট্রিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। যা অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের জন্য বড় আশার ইঙ্গিত দেয়।

ড. ইউনূস বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নতুন শুল্ক স্থগিত করার এই সিদ্ধান্তের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে এই সিদ্ধান্ত কেবল বাংলাদেশের জন্য নয়, সমগ্র বিশ্ব অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ।

বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের সময় ড. ইউনূসের নেতৃত্ব এবং বিচক্ষণতা আবারও তার অসাধারণ প্রভাব এবং বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করেছে। একটি চিঠি কীভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে পারে, এই ঘটনাটি তার এক অনন্য উদাহরণ।

Scroll to Top