ড. ইউনূসের এক মন্তব্যে কেঁপে গেছে দিল্লি, নতুন করে বোমা ফাটালেন কর্নেল জগলুল

সাবেক সামরিক কর্মকর্তা কর্নেল জাগলুল আহসান “ফেস দ্য পিপল” অনুষ্ঠানের এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “সেভেন সিস্টার্স” আগেও ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, এখন আরও বেশি ঝুঁকির মুখে পড়েছে এবং তাদের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৮০%।

তিনি বলেন, “ভারতের প্রতিক্রিয়া হবে অত্যন্ত শক্তিশালী। এখনইতো স্বাধীন হয়ে যাবে। আপনি শিলিগুড়িতে বন্ধ করে দেন আর বাংলাদেশ তারা আর কোনও অস্ত্র সাপ্লাই পাঠাতে পারবে না। দেখেন সে আলাদা হয়ে যায় কি না

ড. ইউনূসের “সেভেন সিস্টার্স” সম্পর্কিত মন্তব্যকে ঘিরে তৈরি হওয়া আলোড়ন সম্পর্কে কর্নেল জাগলুল বলেন, “এই বিষয়ের চারপাশে এত আলোড়ন কেন, তা বুঝতে হলে আমাদের প্রথমে দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষমতার ভারসাম্য বা পাওয়ার ইকুয়েশনটা বুঝতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, ভারত মহাসাগরের গুরুত্ব এবং সেটি দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ, সেটিও বুঝতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও পাকিস্তানের ভূরাজনৈতিক লক্ষ্যগুলো বুঝলেই বোঝা যাবে কেন ভারত এত তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।

ক্ষমতার এই ভারসাম্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে ১৯৯০ এর আগে কোল্ড ওয়ার এর সময় যে পাওয়ার ইকুয়েশনটা সেটা ছিল এখানে রাশিয়া, ইন্ডিয়া, আমেরিকা এবং পাকিস্তান। তারপর পাকিস্তান আর চায়না মিলে আরেকটা প্যারালাল পাওয়ার ব্যালান্স ছিল। ৯০ তে যখন কমিউনিজম ফল করল তখন পাকিস্তান থেকে সরে ইউএসএ এলো ইন্ডিয়ার কাছে। কারণ কোল্ড ওয়ার এরপরে ইউএস এর কাছে সবদিক থেকে শত্রু ছিল চায়না।কারণ চায়নাকে যদি সবদিক থেকে কন্ট্রোল করতে হয় আমেরিকার জন্য সবচেয়ে ভালো হলো ভারত। আর এজন্যই তখন ভারত-আমেরিকা পার্টনারশিপটা হল।

অন্যদিকে, পাকিস্তান চীনের সঙ্গেই জোটবদ্ধ থাকলেও, কৌশলগত গুরুত্ব হারিয়ে ফেলায় তা গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে।

ভারত মহাসাগরের গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ভূ-কৌশলগত গুরুত্ব এখান থেকেই বোঝা যায়। ১৮৯০-এর দশকে নেপালের একজন নৌ-কৌশলবিদ মাহান বলেছিলেন, ‘যে ভারত মহাসাগরকে নিয়ন্ত্রণ করবে, সে পুরো বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করবে। ওনি এটা কেন বলছেন কারণ ৬টা মেইন চ্যানেল যেগুলোতে ৮০ পার্সেন্ট ওয়ার্ল্ড জাহাজ বা কার্গো ট্র্যাভেল করে সেটা হচ্ছে ইন্ডিয়ান ওশান দিয়ে । এটা হচ্ছে লার্জেস্ট পপুলেশন, উদীয়মান অর্থনীতি, সস্তা শ্রমবাজার এবং যেটা হচ্ছে যে মধ্য প্রাচ্যের জ্বালানি এখন ২য় হয়ে যাবে এবং টপ গ্রেড হবে হচ্ছে ইউরেনিয়াম। সেন্ট্রাল এশিয়া, আজারবাইজান এটা হচ্ছে সেন্ট্রাল ইউরেনিয়ামের বিষয় জড়িত আছে তাই এটা কন্ট্রোল করতে হবে। যে কারণে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অন্য ফ্যাক্টরগুলো আছে।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ এশিয়ার ‘বেলি’-তে অবস্থিত — যা ভারত মহাসাগরে প্রবেশের এক দুর্দান্ত অবস্থান। এখান থেকেই মধ্য এশিয়া হয়ে চীনের কুনমিং পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত রুট তৈরি হয়। এই অঞ্চলটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চোক পয়েন্ট হলো মালাক্কা প্রণালী, যেখান দিয়ে চীনের ৮০% তেল পরিবাহিত হয়। এটিকে চীনের ‘লাইফলাইন’ বলা হয়। এই ভারত মহাসাগরীয় বেল্ট নিয়ন্ত্রণ করতে চীন অনুসরণ করে ‘কৌশলগত ঘেরাও’-এর নীতি। অন্যদিকে, ভারত চায় এই অঞ্চলে নিজের প্রাধান্য বজায় রাখতে, যেন চীনা আধিপত্য প্রতিহত করা যায়।

Scroll to Top