অবশেষে ধরা দিলেন পলাতক হাসিনার পুত্র জয়, ৭ মাসে ৭ বছরের পরিবর্তন

অবশেষে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে দেখা গেল। দীর্ঘদিন পর জনসমক্ষে তার উপস্থিতি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। তবে, তার উপস্থিতি দেখে সবাই  অবাক।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর, জয় একাধিক ভিডিও বার্তায় বিভিন্ন কথা বলেছিলেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কথা বললেও, গত বছরের ১১ আগস্টের পর তিনি চুপ হয়ে যান। এরপর তাকে আর কোথাও দেখা যায়নি। এবার, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে তার একটি ছবি। তবে, একই ছবির সঙ্গে নানা জনের বিভিন্ন মন্তব্য এসেছে। প্রবাসী সাংবাদিক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ডক্টর কনক সরোয়ার রোববার সকালে তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে জয়ের একটি ছবি পোস্ট করেন।

ছবিটি ক্যাপশন সহ শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, “বাংলাদেশের জনগণের অন্যতম সম্পদ লুণ্ঠনকারী পলাতক হাসিনার পুত্র এখন নিঃসঙ্গ।” কনক সরোয়ার আরও লিখেছেন, “আওয়ামী লীগের জন্য ছোট হয়ে আসা পৃথিবীতে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েও তার চেহারায় উদ্বিগ্নতার ছাপ রয়েছে। মাত্র ২২১ দিন আগে যে জীবন ছিল, এখন তা একেবারে বদলে গেছে। গত সাত মাসে তার বয়স যেন এক ধাক্কায় সাত বছর বেড়ে গেছে।”

ছবিটি ওয়াশিংটন ডিসির ভার্জিনিয়ার ডালা শপিং সেন্টারের ভেতরে বিকেলে তোলা হয়েছে বলে জানা গেছে। কনক সারওয়ারের ছবি শেয়ার করার পর প্রবাসী সাংবাদিক নাজমুস সাকিব লিখেছেন, “জাতির ভাইগনা স্পটেড। সাড়ে হাজার খ্যাত সজীব আহমেদ ওয়াজেদ, যিনি সজীব ওয়াজেদ জয় নামে অধিক পরিচিত।” তিনি আরও জানান, জয় সর্বশেষ তার প্রেমিকার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে দেখা দিয়েছিলেন। বহুদিন পর তাকে আবারো পাবলিক প্লেসে দেখা গেল, এবার তাকে দেখা গেছে আমেরিকার ভার্জিনিয়ার একটি শপিং মলে।

অনেকেই ছবিটিতে মন্তব্য করেছেন, “সবসময় ক্লিন শেভ থাকলেও এবার তার মুখে সাদা সাদা খোঁচা খোঁচা দাড়ি এবং কিছুটা বিধ্বস্ত মনে হয়েছে।” সাকিবের পোস্টের সঙ্গে আরও একটি ছবি জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

ছবিটি পোস্ট হওয়ার সাথে সাথেই এটি ফেসবুকের ট্রেন্ডিং “পপুলার নাউ” বিভাগে চলে গেছে। অনেকেই বিভিন্ন গ্রুপে ছবিটি শেয়ার করছেন। একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “দেশের জনগণের সম্পদ লুট করা পলাতক ফ্যাসিস্ট হাসিনার ছেলে জয় এখন খুবই একা।” আরেকজন মন্তব্য করেছেন, অবৈধ ক্ষমতার বাহাদুরি, মাসিক কোটি টাকা বেতনের প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা পদধারীর আজগুবি তথ্য প্রদানকারী ডাকাতের রমরমা ইনকাম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তার চেহারায় সেই জৌলুস আর নেই।”

আরেকজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “আমি মাত্র আট মাসে লোকটিকে চিনতে পারছি না! আহ, কত দাম্ভিকতা, দাপট, হুংকার, ইজ্জত-সব কিছুই নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। এটা যেন শিক্ষা হয়ে দাঁড়াবে।” এদিকে, আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “ছবিটি জীবনের গল্পই বলে দেয়।”


ভাগ্য বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশের, হতে পারে অন্যতম ধনী দেশ

বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ হলেও এর সম্ভাবনা বিশাল। দেশের বিশাল সমুদ্রসীমা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বিশাল সুযোগ এনে দিতে পারে। বাংলাদেশ যদি এই সমুদ্র সম্পদকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে, তাহলে এটি এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী অর্থনৈতিক অঞ্চল হয়ে উঠতে পারে এবং দেশের অর্থনীতির চিত্র বদলে যেতে পারে।

সমুদ্রসীমার গুরুত্ব এবং সম্ভাবনা

বাংলাদেশ ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের একটি দেশ, তবে সম্ভাবনার দিক থেকে এটি অপরিসীম। দেশের বিশাল সমুদ্রসীমা ১,১৮,৮১৩ বর্গকিলোমিটার, যার মধ্যে ২০০ নটিক্যাল মাইলের একটি এক্সক্লুসিভ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত একটি মহাদেশীয় শেলফ রয়েছে। এই বিশাল জলসীমাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা সম্ভব।

বিশ্বে ৪৪টি দেশ এবং পাঁচটি নির্ভরশীল অঞ্চল রয়েছে যাদের কোনও সমুদ্রসীমা নেই। তবে, যেহেতু বাংলাদেশ একটি সমুদ্রসীমাযুক্ত দেশ, তাই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও জাহাজ শিল্পে প্রবেশের বিশাল সুযোগ রয়েছে। সম্প্রতি নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ তাদের একটি সমুদ্র রয়েছে, যা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করে। ব্যবসার সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভাগ্য বদলে যাবে।”

বাণিজ্য ও যোগাযোগের সম্ভাবনা

বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলিকে আধুনিকীকরণ করা গেলে দেশের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরগুলিকে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আধুনিকীকরণ করা গেলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। তাছাড়া, গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরি করা হলে, ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

শুধু সমুদ্রপথের উন্নয়নই নয়, বাংলাদেশ তার নিজস্ব শিপিং শিল্পকে আরও সম্প্রসারিত করতে পারে। আন্তর্জাতিক কন্টেইনার জাহাজ পরিচালনার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বড় সুযোগ তৈরি হবে।

মৎস্য ও জ্বালানি সম্পদের সম্ভাবনা

বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্র অঞ্চলে প্রচুর মৎস্য সম্পদ রয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা বৃদ্ধি করা গেলে, রপ্তানি বৃদ্ধি করে দেশের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ করা যেতে পারে।

এছাড়াও, বঙ্গোপসাগরের তলদেশে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস ও তেল রয়েছে। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ইতিমধ্যে গবেষণা পরিচালনা করেছে এবং অনুসন্ধান ও উত্তোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ জ্বালানি খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে।

পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন

বাংলাদেশ পর্যটন খাতেও বিপুল সম্ভাবনাময় একটি দেশ। আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন এবং অন্যান্য উপকূলীয় অঞ্চলগুলিকে আরও উন্নত করা হলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

সঠিক পদক্ষেপের প্রয়োজন

সমুদ্র সীমান্তকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত করা সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয়।

এক কথায়, সমুদ্র সম্পদ ব্যবহার করেই বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতিতে পরিণত হতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার এখনই সময়।