চেক সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিপত্তিতে পড়ে আজ বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে রীতিমতো আলোচনায় আসেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। একদিকে পোস্টিতে যেমন মন্তব্য পড়ছে, অন্যদিকে ঝড়ের গতিতে বাড়ছে শেয়ারও। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বাংলা লেখা দেখলে যারা চেক ফিরিয়ে দেয়, তাদের আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবেন। চুপচাপ বসে থাকলে ধারাবাহিকতা হয়ে যাবে। তারা প্র্যাকটিস করবে।
তিনি বলেন, মনে করবেন না যে, আমি মন্ত্রী হয়েছি বলেই প্রতিবাদ করেছি। মন্ত্রী না থাকলেও প্রতিবাদ করব। আমি জন্ম থেকেই প্রতিবাদ করছি। এ প্রতিবাদ আমার রক্তের মধ্যে আছে।
তিনি আরও বলেন, আমার দেশটা তৈরি হয়েছে বাংলা ভাষার জন্য। এই দেশের সাংবিধানিক রাষ্ট্রভাষা বাংলা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তো বায়ান্ন সাল থেকে বাংলায় বক্তব্য দিয়ে আসছেন। আমরা তার উত্তরসূরি হিসেবে কেমন করে বাংলা ভাষার বাইরে যেতে পারি? এটা চিন্তারও বাইরে।
ডিজিটাল প্লাটফর্মে বাংলা ভাষার ব্যবহার রয়েছে জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আগে সবাই বলতো বাংলা সব জায়গায় ব্যবহার করা যায় না। আমি বলি, এমন কোনো ডিজিটাল ডিভাইস নেই যেখানে বাংলা ভাষার ব্যবহার করা যায় না। তাহলে বাংলা আমি ব্যবহার করব না কেন?
বাংলা ভাষা ব্যবহার আসলে মানসিকতার বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যদি আমি বাংলা ভাষা ব্যবহার না করি তাহলে সেটা আমার মানসিকতা। এই মানসিকতা দূর করা দরকার। যত জায়গায় সম্ভব, যত জায়গায় আমি প্রতিবন্ধকতা পাই, তত জায়গায় প্রতিবাদ করি। কোনো অবস্থাতেই আমি ছাড় দিই না। যে অবস্থা-ই থাকুক, আমি প্রতিবাদ করবই। আমি যে পজিশনেই থাকি, প্রতিবাদ করবোই।
তিনি বলেন, যেদিন থেকে ব্যাংকে চেক লিখি, কোনো দিন আমি ইংরেজি হরফ ব্যবহার করিনি। স্বাক্ষরও বাংলায় দিই। অতএব এ অবস্থায় আমি কমপ্রোমাইজ করব না।
বাংলা ভাষার জন্য যেখানে লাখ লাখ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে, আর সেখানে বাংলা লেখার জন্য একজন মন্ত্রীর এমন বিপত্তিতে পড়াটা, রীতিমতো দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। মন্ত্রীর এমন প্রতিবাদে মুদ্ধ হয়েছেন সবাই। বাংলা ভাষার প্রতি তার এ ভালোবাসা আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন নেটিজেনরা।