হাসিনা ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী হয়ে: দিবাস্বপ্ন দেখছে আওয়ামী লীগ ও ভারত?

সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না—এটাই বাস্তবতা। একবার চলে যাওয়া ট্রেন আর ফিরে আসে না, টাইম ট্রাভেলের গল্পও কেবল বিজ্ঞানের সূত্র আর সিনেমার ফ্রেমেই সীমাবদ্ধ।

কিন্তু তবুও, একটি দল ও একটি দেশ এখনো দিবাস্বপ্ন দেখে চলেছে। তারা মনে করছে, হারানো ক্ষমতা আবার ফিরে পাবে, আগের মতো নিয়ন্ত্রণ করবে, লুটপাট চালাবে। তারা বিশ্বাস করতে চায়, যেখান থেকে তারা থেমেছিল, সেখান থেকেই আবার সবকিছু শুরু করতে পারবে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে, এক নদীতে দু’বার নামা যায় না। সময় বদলে গেছে, মানুষ বদলে গেছে, এবং পাল্টে গেছে রাজনীতির দৃশ্যপটও।

আজকের বাংলাদেশ বাস্তবতার নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে, যেখানে আওয়ামী লীগ ও ভারতের পুরনো গল্প বদলে যাচ্ছে। দিল্লির নীতিনির্ধারকরা এখনো আতঙ্কিত। ভারতের এক সাংবাদিক তো সাত মাস আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, “এই বাংলাদেশ আর থাকবে না।” কিন্তু বাস্তবতা বলছে অন্য কথা।

আওয়ামী লীগের ক্ষমতা হারানো নেতাদের এনে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো একের পর এক প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা এখনো ধরে রাখতে চায় সেই পুরনো মোহ—”হাসিনা আবার ফিরে আসবেন, প্রধানমন্ত্রী হয়ে।” কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে, বিভক্তি স্পষ্ট। একদিকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, অন্যদিকে বিতর্কিত শাসনের উত্তরাধিকার।

যদিও ভারতীয় গণমাধ্যম এখনো পুরনো বাস্তবতাকে আঁকড়ে ধরে আছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো এক আওয়ামী লীগ নেতাকে এনে বলানো হচ্ছে, “হাসিনা ফিরছেন!” কিন্তু সত্যিটা হলো—এটা বাস্তবতার সাথে কোনোভাবেই মেলে না।

ভারত এখনো দাবি করছে, চলমান আন্দোলন বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর দ্বারা পরিচালিত। কিন্তু তারা গণঅভ্যুত্থানের বাস্তবতা স্বীকার করতেও ভয় পাচ্ছে। দিল্লির শাসকগোষ্ঠী হতাশ, কারণ জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিবেদনেও শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছে। নির্বিচার গুলি, বিচারবহির্ভূত হত্যা, দমন-পীড়নের মতো বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক মহলে আলোচিত।

তবে এসব অপরাধের অনেক অভিযুক্ত ব্যক্তি ভারতে আশ্রয় পেয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের রক্ষা করায় ভারতও চাপের মুখে পড়তে পারে। কিন্তু ভারতের মিডিয়া ও সরকারের আচরণ দেখে প্রশ্ন উঠছে—কার ইঙ্গিতে এই প্রচার? কাদের স্বার্থে এত প্রচেষ্টা?