শেখ হাসিনা ও পরিবারের ১২৪ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ

আদালত আওয়ামী লীগের ১০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন, যেখানে মোট অর্থের পরিমাণ ৩৭ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৬১০ টাকা। একইসঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৭টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করা হয়েছে, যেখানে রয়েছে ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯৫৮ টাকা।

শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের পাশাপাশি তাঁর পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট মোট ১২৪টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে এই আদেশ আসে।

দুদকের অনুসন্ধান অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের ব্যাংক হিসাবগুলোর মধ্যে ধানমন্ডির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের শাখায় ৮ কোটি ৯৭ লাখ ৮৯ হাজার ৬৭৪ টাকা জমা রয়েছে। এছাড়া একটি বেসরকারি ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখায় তিনটি ব্যাংক হিসাবে ২০ কোটি ৬৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৭০ টাকা পাওয়া গেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনী তহবিল হিসাবেও ২ কোটি ৭১ লাখ ১৫ হাজার ৯১৯ টাকা এবং ১ কোটি ২৬ লাখ ৪২ হাজার ৫৬০ টাকা জমা ছিল।

শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে মাত্র ৫ টাকা, অন্যটিতে ১৫০ টাকা পাওয়া গেছে, তবে সর্বোচ্চ এক হিসাবে ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা পাওয়া যায়, যা শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানার যৌথ হিসাব। শেখ রেহানার ছয়টি ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ২৩ লাখ ৯৬ হাজার ১৬৭ টাকা জমা থাকার তথ্যও দুদক আদালতে উপস্থাপন করেছে।

এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের ২৯টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে, যেখানে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ৪৬৬ কোটি ২৬ লাখ ৮৮ হাজার ২৭৬ টাকা।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা ও তাঁদের পরিবারের আরও কয়েকজনের স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের গুলশানের একটি ফ্ল্যাট, ধানমন্ডিতে জয় ও সায়মার ‘সুধা সদন’ এবং গাজীপুরের কিছু সম্পত্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

শুধু তাই নয়, আদালত শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ওই দিনই তিনি ভারতে পালিয়ে যান। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা ও দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রায় তিন শতাধিক মামলা হয়েছে, যার মধ্যে দুদকের পক্ষ থেকে ছয়টি মামলা প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা হয়েছে।