সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি আট পরিবারের ৩৬০০ কোটি টাকা

সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলো বিশ্বব্যাপী নিরাপদ এবং গোপনীয়তার জন্য প্রসিদ্ধ। এর মধ্যে ক্রেডিট সুইস ব্যাংক অন্যতম, যেখানে ২০২২ সালে ফাঁস হওয়া “সুইস সিক্রেটস” তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, বাংলাদেশি আটটি পরিবারের সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল অর্থ রয়েছে।

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের বিপুল সম্পদ,ওসিসিআরপি (অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট) কর্তৃক প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৮ পরিবারের অন্তত ৬৮টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে ক্রেডিট সুইস ব্যাংকে, যেখানে মোট ২৬১.৯ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩৬০০ কোটি টাকা) বিভিন্ন সময়ে জমা রাখা হয়েছে। এসব অ্যাকাউন্ট ২০১২ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে খোলা হয় এবং কিছু অ্যাকাউন্ট বন্ধও হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি অর্থ গচ্ছিত সামদানি পরিবারের,এই তালিকায় সবচেয়ে বেশি সম্পদ রয়েছে সামদানি পরিবারের। রাজীব সামদানি, তার স্ত্রী নাদিয়া সামদানি, ছোট ভাই মেহেদী সামদানি ও গোল্ডেন হারভেস্টের পরিচালক মহিয়াস সামাদ চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবে হাজার কোটি টাকার বেশি গচ্ছিত রয়েছে। রাজীব সামদানি গোল্ডেন হার্ভেস্ট গ্রুপের কর্ণধার এবং দামী শিল্পকর্ম সংগ্রহ ও সরবরাহের জন্য পরিচিত।

আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও অন্যান্যরা পিছিয়ে নেই,শুধু সামদানি পরিবারই নয়, আজিজ মোহাম্মদ ভাই, তার বোন নূরজাহান হুদা এবং জামাতা হুদা এল ইদ্রোসের অ্যাকাউন্টেও বিপুল অর্থ জমা রয়েছে। এছাড়া, আলোচিত মিরালী পরিবারের সদস্যদের নামও উঠে এসেছে। তাদের ৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৫৯১ কোটি টাকার বেশি রয়েছে।

অন্যান্য প্রভাবশালীর সম্পদ,হিসামুদ্দিন সালেহ, ফাতেমা সালেহ, আমিন সালেহ, রহিমা ফুড কর্পোরেশনের আব্দুর রউফ চৌধুরী, রবি রউফ চৌধুরী, রাফিয়া চৌধুরী, মাসুক হক, আফরোজা হক, সিলেটের সাবেক এক এমপির পরিবারসহ আরও অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির সুইস ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

রাজনীতির সঙ্গে যোগসূত্র?

রাজীব সামদানি ও তার পরিবার শুধু শিল্পকলা সংগ্রহের জন্য পরিচিত নন, বরং আওয়ামী লীগ সরকারের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ঢাকা আর্ট সামিট আয়োজন এবং মূল্যবান শিল্পকর্মের ক্রয়-বিক্রয়েও তার নাম জড়িত।

এই বিপুল সম্পদের উৎস কী এবং কেন এই অর্থ সুইস ব্যাংকে রাখা হয়েছিল—এমন প্রশ্ন এখন জনমনে। তদন্ত করলে হয়তো এই অর্থের প্রকৃত উৎস জানা যাবে।

Scroll to Top