রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আবদুল লতিফ হলে এক ছাত্র সংগঠনের সভাপতির কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ আবার দাবি করেছেন, এসব অস্ত্র হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতির কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আবার কেউ কেউ দাবি করছেন এসব অস্ত্র ছাত্রশিবির সভাপতির কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্রদলের আহ্বায়ক এবং ছাত্রশিবিরের সভাপতি। তারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
আসলে ভিডিওটি ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট টঙ্গিবাড়ি থানায় লুটপাট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের দৃশ্য। সে সময় সেনাবাহিনীর অভিযানে এসব অস্ত্র উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু সেই পুরোনো ভিডিওটিই এখন রাবির নবাব আব্দুল লতিফ হলের ঘটনা বলে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা আদতে সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, “এটি শতভাগ গুজব। আমরা সরেজমিন তদন্ত করেছি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে বিষয়টি যাচাই করেছি। নবাব আব্দুল লতিফ হলে এমন কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়াতে গুজবটি ছড়িয়েছে।”
রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওটি আমার নজরে এসেছে। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে গুজব ছড়ানো হয়েছে। ছাত্রশিবির অস্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, বরং আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করি। যারা এ ধরনের গুজব ছড়ায়, তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার জন্য আমাদের দুঃখ হয়।”
ছাত্রদলের পক্ষ থেকেও একই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “এটি যে পুরোপুরি গুজব, তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে। কিছু মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ ধরনের ভিডিও ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করতে চায়। অতীতেও তারা বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্র মজুদ থাকার গুজব ছড়িয়েছে, যা একেবারেই ভিত্তিহীন।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের এ ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং যারা এই গুজব ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে।