এবার আর ছাড় নয়: অপকর্মে বহিষ্কৃতদের আর সুযোগ দেবে না বিএনপি

গণ-অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর বিএনপি জানিয়ে দিয়েছে যে, দলে দখল, চাঁদাবাজি ও অপকর্মের দায়ে বহিষ্কৃত নেতাকর্মীদের আর কোনো সুযোগ দেয়া হবে না। এটি দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে একটি শক্তিশালী বার্তা, যে “ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়”। দলের এই সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভবিষ্যতে যেসব নেতাকর্মী দখল, চাঁদাবাজি বা আইনি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। দলের সৎ ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পতিত স্বৈরাচারের সমর্থকদের জন্য আর জায়গা নেই এবং কোনো সন্ত্রাসী বা অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিডদেরও দলে স্থান দেওয়া হবে না।

তবে, দলের কঠোর অবস্থান সত্ত্বেও বিভিন্ন স্থানে বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা নানা ধরনের অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন, যা দলের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। নেতারা আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরও বাড়তে পারে। দলের সূত্র অনুযায়ী, দখল, চাঁদাবাজি ও অনুরূপ অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং তাদেরকে আর বিএনপি’র রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া হবে না।

সাম্প্রতিক বর্ধিত সভায়, ২৭ ফেব্রুয়ারি, দলের এই অবস্থান স্পষ্ট করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, যিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দিনাজপুরের আব্দুস সালাম মিলন সভায় অভিযোগ করেন যে, ৫ আগস্টের পর দলের ভেতরে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, এই ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে হবে এবং ত্যাগীদের কোণঠাসা ও বহিষ্কার করা হচ্ছে।

সভায় আরও বলা হয়, সুবিধাবাদীরা দলের ভেতরে ভালো জায়গায় আছেন, যা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। একসাথে থাকলে এই সুবিধাবাদী ও হাইব্রিডদের রুখে ফেলা সম্ভব। নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার পরামর্শও দেয়া হয়। সন্ত্রাসী ও অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া হবে।

সভায় বিএনপি’র সব অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের জনগণের সাথে সংযুক্ত হয়ে তাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অর্জন করতে নির্দেশ দেয়া হয়। এর পাশাপাশি দুর্নীতি, অনাচার ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকে বিরত থাকার নির্দেশনাও দেয়া হয়। একত্রিত ও শক্তিশালী বিএনপি গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করা হয়।

স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, সভায় “ঐক্যেই শক্তি” বার্তা দেয়া হয়েছে এবং নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং সন্ত্রাসী ও অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সভায় আরো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। দলের সৎ ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করারও দাবি জানানো হয়।

আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম বলেন, সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধি এবং নেতাকর্মীদের মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

Scroll to Top