গরু-ছাগলের ব্যবসার আড়ালে চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ১৩৩ কোটি টাকার বেশি মানিলন্ডারিং করেছেন সাদিক এগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেন। এর মধ্যে ৮৬ লাখ টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় সোমবার রাজধানীর মালিবাগ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির অতিরিক্ত ডিআইজি (অর্গানাইজড ক্রাইম) একরামুল হাবিব জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, সংঘবদ্ধ চক্রের সহায়তায় ইমরান হোসেন চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন। এই অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়েছে।
সাদিক এগ্রো লিমিটেড কৌশলে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে গরু-মহিষ এনে বিক্রি করত, আবার ভুটান ও নেপাল থেকে ছোট আকৃতির গরু এনে বাজারজাত করত। দেশীয় গরুকে বিদেশি ব্রাহমা জাতের গরু হিসেবে প্রচার করে কোরবানির বাজারে উচ্চ দামে বিক্রি করা হতো।
ঢাকা কাস্টমস হাউজের আটক ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জবাই করে মাংস বিক্রি করার কথা ছিল। তবে ইমরান হোসেন কাগজপত্রে জবাই দেখিয়ে গরুগুলো আত্মসাৎ করেন এবং পরে কোরবানির সময় বিক্রি করেন।
তদন্তে আরও বেরিয়ে এসেছে, ইমরান হোসেন ১১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা নিজের মালিকানাধীন ‘জালালাবাদ মেটাল লিমিটেড’ নামে এফডিআর করে বিনিয়োগ করেছেন, যা মানিলন্ডারিং করা অর্থ বৈধ করার একটি প্রচেষ্টা।
এছাড়া, মোহাম্মদপুর থানার বেড়িবাঁধ এলাকায় রামচন্দ্রপুর সরকারি খাল ভরাট ও দখল করে অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন ইমরান হোসেন।
সিআইডির মতে, এই প্রতারণা চক্রে সাদিক এগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌহিদুল আলম জেনিথসহ আরও ৫-৭ জন জড়িত।
গ্রেপ্তারকৃত ইমরান হোসেনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।