বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে কিছুটা অস্বস্তি দেখা দেয়। গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রায় সাত মাস পার হলেও দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক টানাপোড়েন পুরোপুরি কাটেনি।
সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাসকাটে ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকের পর দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে নতুন বার্তা পাওয়া গেছে, যা তুলে ধরেছে ঢাকা পোস্ট।
বৈঠকের পর ঢাকায় এসেছে দিল্লির ইতিবাচক বার্তা। চৌকস কূটনীতিক রিয়াজ হামিদুল্লাহর এগ্রিমো (নিয়োগের প্রস্তাব) অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার। ফলে তিনি এখন দিল্লিতে বাংলাদেশের নতুন হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন, যেখানে তিনি সাবেক হাইকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য কূটনৈতিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। একই সঙ্গে সূত্র জানিয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের প্রস্তাবিত দূতের এগ্রিমোও দিল্লির অনুমোদন পেয়েছে। ফলে নতুন দূত পাঠানোর ক্ষেত্রে আর কোনো কূটনৈতিক বাধা রইল না।
স্থানীয় কূটনীতিকদের মতে, ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অস্বস্তি কাটাতে এবং ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র তৈরি করতে নতুন দূতকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। বিশেষ করে, ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ এবং দুই দেশের মধ্যকার ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নির্ধারণে তার কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
তবে আশার বিষয় হলো, বহুপাক্ষিক অর্থনীতি ও কানেক্টিভিটিতে অভিজ্ঞ রিয়াজ হামিদুল্লাহ ভারতকে ভালোভাবেই জানেন ও চেনেন। তিনি দেশটিতে পড়াশোনা করেছেন এবং কূটনৈতিক দায়িত্বও পালন করেছেন।
গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ সরকার তাকে ভারতের নতুন হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগের জন্য এগ্রিমো পাঠায়। সে সময় তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আঞ্চলিক সংস্থা ও বহুপাক্ষিক অর্থনৈতিক বিষয়াবলির দায়িত্বে ছিলেন এবং অতিরিক্ত পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে কাজ করছিলেন। বর্তমানে তিনি পররাষ্ট্রসচিব (পশ্চিম) হিসেবে ঢাকায় দায়িত্ব পালন করছেন।