শেকৃবিতে ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা উৎসব বন্ধের নির্দেশ, প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের নেপথ্যে কী?

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী প্রকাশনা উৎসব বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এই উৎসব দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও প্রশাসনের সিদ্ধান্তে তা বন্ধ হয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আশাবুল হক জানিয়েছেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে প্রশাসনের প্রস্তুতির কথা বিবেচনায় নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, পূর্বঘোষিত ১৯-২০ ফেব্রুয়ারি এই আয়োজনের প্রথম দিন শেষ হওয়ার পর প্রশাসন স্টলগুলো সরিয়ে নিতে বলে। নির্দেশ অমান্য করলে স্টল ভেঙে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।

বুধবার বিকেল ৫টার দিকে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক, প্রক্টর এবং সহকারী প্রক্টর অনুষ্ঠানস্থলে এসে আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলেন।

অধ্যাপক আশাবুল হক বলেন, ‘আমরা কোনো বাধা দেইনি, বরং আয়োজকদের অনুরোধ করেছি যেন তারা অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করে এবং আজকের মধ্যেই শেষ করে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও ২১ ফেব্রুয়ারির প্রস্তুতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আয়োজকরা যদি প্রশাসনের অনুরোধ না মানেন, তাহলে এ নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনা করা হবে।’

অন্যদিকে, ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, তাদের প্রকাশনা উৎসব সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালিত হচ্ছিল এবং এতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা ছিল না।

এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করলেও, অনেকেই এর বিরোধিতা করছেন।

প্রকাশনা উৎসবে আসা এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা এখানে শুধু বই দেখতে ও কিনতে এসেছি। এটি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, তাহলে কেন এটি বন্ধ করা হলো? বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্ত চিন্তার চর্চা হওয়া উচিত, কিন্তু এভাবে বারবার বাধা দিলে আমাদের স্বাধীন মত প্রকাশের পরিবেশ সংকুচিত হয়।’

শেকৃবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবুল হাসান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের জন্য এই প্রকাশনা উৎসব আয়োজন করেছি, যা দীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ ছিল এবং প্রশাসনের নীরব সম্মতিতেই হয়েছিল। ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে আমরা শহীদ মিনারের পরিবর্তে টিএসসির সামনে স্থানান্তর করেছি এবং রাত ৮টার মধ্যে সব কার্যক্রম শেষ করে জায়গা পরিষ্কার রাখার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছি।’

Scroll to Top