বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাঁদপুর জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর সংগঠনটিতে ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। ঘোষিত কমিটিকে ঘিরে ক্ষোভ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন ১৬০ জন নেতা-কর্মী। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসানাত আব্দুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষরিত নতুন জেলা কমিটি প্রকাশ করা হয়। ২১৩ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটি ঘোষণার পরপরই সংগঠনের একাংশ এর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং কেন্দ্রের কাছে জবাবদিহিতা চেয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র প্রতিনিধি মোজাম্মেল হোসেন বলেন, চাঁদপুরের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই যেভাবে এই কমিটি গঠিত হয়েছে, তা আমাদের প্রত্যাশার বিপরীত। যারা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন, তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। ফলে এই কমিটি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, আমরা একে বর্জন ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।
তিনি আরও বলেন, ‘২৪ সালের আন্দোলনে শহিদ ও আহতরা যে লক্ষ্য নিয়ে লড়াই করেছে, এই কমিটি সেটারই বিরোধী অবস্থানে রয়েছে। এটি ঘোষণার পর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা অনেক নেতাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে, যার ফলে ২১৩ সদস্যের মধ্যে প্রায় ১৬০ জনই পদত্যাগ করেছেন। এমনকি, যারা এই কমিটিতে রয়েছেন, তাদের অনেকেই জানতেন না যে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শুধু নতুন কমিটি দিলেই হবে না, কেন্দ্রের উচিত এ নিয়ে জবাবদিহিতা করা।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক নেতা সাকিব হোসেন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা বাস্তবে প্রতিফলিত হয়নি। এই কমিটির মাধ্যমে জেলা ও উপজেলার মধ্যে বিভক্তি তৈরি করা হয়েছে, যা সংগঠনের মূল আদর্শের পরিপন্থী। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল সংগঠনটিকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে, যা আমরা মেনে নিতে পারি না। তাই সবার মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠনের আহ্বান জানাচ্ছি।’
এদিকে, বুধবার রাতে ঘোষিত এই কমিটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় ফেসবুক পেজ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা দ্রুত কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মো. নাদিম পাটওয়ারীকে আহ্বায়ক ও সৈয়দ সাকিবুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে ২১৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।