বিএনপিকে উপেক্ষা করে স্থানীয় নির্বাচনে এগোচ্ছে সরকার

সরকার সংসদ নির্বাচনের আগেই স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে, যদিও বিএনপি এর তীব্র বিরোধিতা করছে। দৈনিক সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকার এই পরিকল্পনায় অটল রয়েছে, এমনকি ছাত্র নেতৃত্ব ও জামায়াতে ইসলামীও এতে সমর্থন দিচ্ছে। বিএনপি আশঙ্কা করছে, জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে এবং সরকারি মদদে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ছাত্রদের রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে।

স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও, জামায়াত মনে করে এই নির্বাচন হলে তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপির শক্তি দুর্বল হয়ে পড়বে, যা সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ছাত্র নেতৃত্ব স্থানীয় নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং সরকারের পক্ষ থেকেও তাদের দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এমনকি বিএনপির বাধা থাকলেও, স্থানীয় সরকার প্রশাসনে ছাত্র নেতৃত্বের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘জাতীয় নাগরিক কমিটির’ সাবেক এক নেতাকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য অনুযায়ী, তারা মূলত জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তবে সরকার চাইলে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন করতেও তারা প্রস্তুত।

জামায়াতের সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, সংসদ নির্বাচনের আগেই স্থানীয় নির্বাচন হলে তারা তাতে সমর্থন দেবে।

প্রথম আলো

প্রথম আলো জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ডিসেম্বরের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে এবং নির্বাচন কমিশনও সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও বিএনপি দ্রুত নির্বাচন চায়, জামায়াতের অবস্থান ভিন্ন। তারা মনে করে, প্রয়োজনীয় সংস্কার না করে নির্বাচন আয়োজন হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক কমিটি চায়, আগে গণপরিষদ নির্বাচন হোক, তারপর জাতীয় নির্বাচন। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে, যা নির্বাচনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

যুগান্তর

যুগান্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের প্রতিবেদনের পর শেখ হাসিনার বিচার ও প্রত্যর্পণের দাবি আরও জোরালো হচ্ছে। বিশেষ করে, জুলাই মাসের সহিংসতার ঘটনায় তাকে আশ্রয় দেওয়ার কারণে ভারতের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে পারে।

মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনের বিশ্লেষকদের মতে, জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন এখন একটি বৈশ্বিক দলিল এবং এর ভিত্তিতে ভারত শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হতে পারে।

কালের কণ্ঠ

কালের কণ্ঠ জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু মতপার্থক্য থাকলেও সবাই নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপির বিশ্বাস, ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন হবে, আর নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনাও সে অনুযায়ী এগোচ্ছে।

অন্যদিকে, জামায়াত বলছে, নির্বাচন হতে পারে, তবে আগে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার দরকার। তারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আয়োজনেরও পক্ষে। তবে বিএনপি এতে একমত নয় এবং তারা এই নির্বাচনের বিরোধিতা করছে।

এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, তার সরকার যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজন করতে চায় এবং এ বছরের ডিসেম্বরেও তা হতে পারে। যদিও এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পরই চূড়ান্ত রোডম্যাপ নির্ধারিত হবে।

Scroll to Top