ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টার্স রাজ্যগুলো এতদিন বিজেপির জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ইঙ্গিত দিচ্ছে ভিন্ন কিছুর। মনিপুরে তিন দিন ধরে মুখ্যমন্ত্রীর পদ শূন্য, আর বিজেপি এখনও নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণে ব্যর্থ। এতে শুধু রাজ্যের সাংবিধানিক সংকটই বাড়ছে না, বরং মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপির শক্ত ঘাঁটিগুলোও দুর্বল হয়ে পড়ছে।
বীরেন সিংয়ের আকস্মিক পদত্যাগের পর থেকেই বিজেপি মনিপুরের নতুন মুখ্যমন্ত্রী খুঁজে বের করতে পারেনি। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়কের অভাবে এখন রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সম্ভাবনা বেড়েছে। বিজেপির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ইনচার্জ সম্বিদ পাত্র ইমফলে উপস্থিত থাকলেও, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না।
এই রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুধু মনিপুরেই নয়, গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিজেপির অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি মনিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়, তাহলে বিজেপির আঞ্চলিক আধিপত্য হুমকির মুখে পড়বে। ইতিমধ্যেই কুকি সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধছে। কুকি জো কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বলেন, “বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী আসলে পুরনো সমস্যা নতুন রূপে ফিরে আসবে, যা রাজ্যের স্থিতিশীলতা আরও নষ্ট করবে।”
রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লা জানিয়েছেন, তিনি মনিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রকে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেবেন, যা রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্রপতি শাসন থাকলে বিজেপির ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং সেভেন সিস্টার্স রাজ্যগুলোর মধ্যে তাদের জনপ্রিয়তা কমে যেতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মনিপুরে যদি বিজেপি সংকট কাটিয়ে না উঠতে পারে, তাহলে আসাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়সহ পুরো উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মোদীর নেতৃত্বের ওপর আস্থা কমতে পারে। ফলস্বরূপ, আগামী নির্বাচনে এই অঞ্চল বিজেপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।