জাসদ কার্যালয়ের জায়গায় ‘শহীদ আবু সাঈদ জামে মসজিদ’ নির্মাণের ঘোষণা

বগুড়ার সাতমাথা সংলগ্ন এলাকায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) জেলা কার্যালয় ভেঙে ফেলার পর সেখানে ‘শহীদ আবু সাঈদ জামে মসজিদ’ নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই জায়গায় ব্যানার টাঙিয়ে জানানো হয়, এটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গেজেটিভুক্ত পরিত্যক্ত অর্পিত সম্পত্তি।

জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজ জানিয়েছেন, জায়গাটি সরকারি সম্পত্তি হওয়ায় সেখানে সব ধরনের সাইনবোর্ড সরিয়ে নতুনভাবে অর্পিত সম্পত্তির নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ মালিকানা দাবি করলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপন করতে হবে, এরপর যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে শনিবার বিকেলে ভবনটির ধ্বংসাবশেষের ওপর ‘জুলাই ২০২৪ স্মৃতিকরণ মসজিদের জন্য নির্ধারিত স্থান, বাস্তবায়নে : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা’ লেখা ব্যানার টাঙানো হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে ডা. আব্দুল্লাহ সানি জানান, জুলাই বিপ্লবের শহীদ আবু সাঈদের নামে এখানে মসজিদ নির্মাণ করা হবে। তিনি দাবি করেন, শহীদ আবু সাঈদের পিতা বলেছিলেন, তার সন্তানের নামে মূর্তি না বানিয়ে মসজিদ নির্মাণ করতে, সেই নির্দেশনা অনুসরণ করেই তারা এই উদ্যোগ নিয়েছেন।

এর আগে দুপুরে কিছু ব্যক্তি জায়গাটিকে নিজেদের সম্পত্তি দাবি করে সেখানে ব্যানার ঝুলিয়ে দেন। পরে বিকেল ৫টার দিকে একদল যুবক সেই ব্যানার সরিয়ে মসজিদ নির্মাণের ব্যানার লাগিয়ে দেন। একই সংগঠনের কিছু সদস্য পাশের ভেঙে ফেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়কে টয়লেট হিসেবে ব্যবহারের কথাও জানান।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাতে একদল যুবক সাতমাথায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়, আওয়ামী লীগের এক নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয়, টাউন ক্লাব ও জেলা জাসদ কার্যালয় ভেঙে ফেলে। পাশাপাশি, শহরের কবি নজরুল ইসলাম সড়কে জাতীয় পার্টির অফিসও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে, কিছু ব্যক্তি দাবি করছেন, জাসদ কার্যালয়ের জায়গাটি তাদের পূর্বপুরুষের কেনা সম্পত্তি, যা ১৯৫২ সালে তারা ক্রয় করেছিলেন। তবে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সেটি বেহাত হয় এবং পরবর্তীতে জাসদের দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে।

বগুড়া জেলা জাসদ (ইনু) সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, জায়গাটি একসময় হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজন ব্যক্তির নামে ছিল, যারা ১৯৪৭ সালে দেশত্যাগ করেন। এরপর সরকার ওই সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ১৯৭২ সাল থেকে জাসদ সেখানে কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং লিজের জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে মামলা হওয়ায় প্রক্রিয়া ঝুলে যায়। এক বছর আগে মামলাটি খারিজ হলেও লিজ প্রক্রিয়া এখনও সম্পন্ন হয়নি।

Scroll to Top