বিদেশে পালানোর চেষ্টাকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মানবপাচারকারী চক্রের মূলহোতা তামান্না জেরিনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, তিনি বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় মানবপাচারের অন্যতম হোতা এবং তার মাধ্যমে পাঠানো লোকজনকে রাশিয়ার পক্ষে ইউক্রেন যুদ্ধে নামানো হতো।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) নেপালে পালানোর চেষ্টা করার সময় বিমানবন্দরে তাকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের পরিবার ও তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, দালালদের মাধ্যমে জমি ও স্বর্ণালংকার বিক্রি করে, উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে রাশিয়ায় পাড়ি জমাতেন অনেকে। নাটোরের সিংড়ার হুলহুলিয়া গ্রামের হুমায়ুন কবির ও তার দুলাভাই রহমত আলী একইভাবে রাশিয়ায় যান। তবে সেখানে পৌঁছানোর পর চাকরির প্রতিশ্রুতির বদলে তাদের জোরপূর্বক ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানো হয়।
গত ২৬ জানুয়ারি যুদ্ধে প্রাণ হারান হুমায়ুন কবির। অন্যদিকে রহমত আলী দেশে ফিরতে চান, কিন্তু বন্দিদশায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার পরিবার।
গত ৩০ ডিসেম্বর “ড্রিম হোম ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেড” নামের ঢাকার একটি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে তারা রাশিয়া যান। সেখানে পৌঁছানোর পর ২৩ জানুয়ারি ড্রোন হামলায় নিহত হন হুমায়ুন। তার মৃত্যুর খবর পরিবারের কাছে আসে ২৬ জানুয়ারি।
সিআইডির তৎপরতা ও চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান
এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজরদারি বাড়ায় এবং তদন্তে নামে। অবশেষে রাশিয়ায় মানবপাচারের মূলহোতা হিসেবে তামান্না জেরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ চক্রের সঙ্গে আরও অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জড়িত থাকতে পারে, যাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।