ছেলেকে ছাত্রশিবিরের সমর্থক ফরম পূরণ করাচ্ছেন বাবা-মা

ছেলেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সমর্থক হিসেবে নিবন্ধন করাচ্ছেন অভিভাবকরা। কেউ ছোট ভাইকে নিয়ে এসে সমর্থন ফরম পূরণ করাচ্ছেন, আবার কেউ নিজেই আগ্রহী হয়ে সমর্থক হচ্ছেন।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) সংলগ্ন শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে ছাত্রশিবির আয়োজিত প্রকাশনা উৎসবে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

জানা গেছে, গত দুই দিন ধরে চলমান এ প্রকাশনা উৎসবে ১৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী সমর্থক ফরম পূরণ করেছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই স্কুল শিক্ষার্থী এবং কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও রয়েছেন।

রংপুর মিস্ত্রিপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম তার স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে আসেন ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা মেলায়। বইমেলা ঘুরে দেখার পর তিনি ছেলের জন্য সমর্থক ফরম পূরণ করেন। তিনি বলেন, “বর্তমানে সন্তানদের সঠিক পথে রাখতে হলে তারা কার সঙ্গে মিশছে, তা জানা জরুরি। ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম দেখে মনে হয়েছে, তারা নৈতিক শিক্ষা ও সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়। মাদক থেকে দূরে রাখে। তাই ছেলের জন্য সমর্থক ফরম পূরণ করালাম, যাতে সে ভালো পরিবেশে বড় হতে পারে।”

রংপুর ঈদগাহপাড়া থেকে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মা তার ছেলেকে ছাত্রশিবিরের সমর্থক করিয়েছেন। কম বয়সী ছেলেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের এলাকায় অনেক ছেলেই অল্প বয়সে নেশায় জড়িয়ে পড়ে, বাবা-মাকে অসম্মান করে। ছাত্রশিবিরের ছেলেরা ভালো আচরণ করে, মাদক থেকে দূরে থাকে। তাদের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে। তাই আমার ছেলেকেও এখানে এনেছি, যেন সে ভালো পথে থাকে।”

রংপুর কারমাইকেল কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানও তার ছোট ভাইকে ছাত্রশিবিরের সমর্থক করিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি ছাত্রশিবিরের একজন সাথী। সংগঠনের কার্যক্রম কাছ থেকে দেখেছি এবং নিজেও যুক্ত আছি। আমার অভিজ্ঞতায় কোনো খারাপ দিক পাইনি। আমি চাই আমার ছোট ভাইও এই পরিবেশে থাকুক, পড়াশোনায় মনোযোগী হোক এবং ভালো কাজ করুক।”

প্রকাশনা উৎসবের আয়োজক কমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান বলেন, “এখানে ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা উৎসব চলছে। মানুষ সংগঠন সম্পর্কে জানতে পারছে এবং যে কোনো বয়সী শিক্ষার্থী স্বেচ্ছায় সমর্থক ফরম পূরণ করতে পারছে। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিয়ে এসে সমর্থন ফরম পূরণ করাচ্ছেন।”

বেরোবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি সুমন সরকার বলেন, “বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের কারণে যুবসমাজ নৈতিক অবক্ষয়ের শিকার হচ্ছে। অনেকে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু ছাত্রশিবির পড়াশোনায় ভালো এবং কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত নয়। এসব দেখেই অনেক অভিভাবক স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের সন্তানদের আমাদের সঙ্গে যুক্ত করছেন।”

কম বয়সী বিশেষ করে স্কুল শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তাদের মূল কাজ হবে পড়াশোনা করা, কোরআন-হাদীস পড়া, নামাজ আদায় করা এবং ভালো কাজ করা। নিজেদের ভালো কাজের পাশাপাশি অন্যদেরও উৎসাহিত করবে। এটিই তাদের ভূমিকা হবে।”

Scroll to Top