যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যেসব অভিবাসীর কাছে বৈধ কাগজপত্র নেই, তাদের অবৈধ অভিবাসী হিসেবে গণ্য করে ইতিমধ্যেই ধরপাকড় শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
২০শে জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পর ট্রাম্প শতাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যার মধ্যে অন্যতম হলো অবৈধ অভিবাসীদের দমন। এ ঘোষণার পর নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন থেকে চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া গেছে। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (ICE) সাদা পোশাকধারী কর্মকর্তারা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন, যা বাংলাদেশিসহ অন্যান্য অভিবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
বাংলাদেশি অভিবাসীরা এখন ঘরের বাইরে বের হতেও সাহস পাচ্ছেন না। এমনকি বাড়িঘরেও অভিযান চালানো হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ব্রুকলিনের একটি এলাকায় আড্ডারত অবস্থায় কয়েকজন বাংলাদেশিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় গ্রেপ্তার করা হয়। তবে গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে, জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার বাতিলের উদ্যোগের বিরুদ্ধে ডেমোক্রেট-নিয়ন্ত্রিত ২২টি অঙ্গরাজ্য ও ২টি শহর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তারা দাবি করছে, এই সিদ্ধান্ত মার্কিন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনের লঙ্ঘন।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি আইনজীবী রাজু মহাজন সতর্ক করে বলেছেন, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ বাংলাদেশিদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যারা মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন, তাদের জন্য সেই পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া চাকরির ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যের পরিবর্তে মেধার ওপর গুরুত্ব দেয়ায় অনেক বাংলাদেশি চাকরি হারাতে পারেন।
বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা সতর্কতার সঙ্গে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করা, ওয়ার্ক পারমিটের অপব্যবহার বন্ধ করা, এবং যেকোনো বিতর্ক বা সমস্যায় না জড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
বাঙালি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে আগে যেখানে মানুষের ব্যাপক ভিড় দেখা যেত, এখন সেগুলো ফাঁকা হয়ে পড়েছে। রেস্তোরাঁ ও সড়কগুলোতে লোকজনের আনাগোনা কমে গেছে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে সেখানে এখন এক ধরনের শূন্যতার পরিবেশ বিরাজ করছে।