বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী তার দীর্ঘ আট বছরের বন্দিজীবনের নির্মম অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। তিনি জানান, তাকে টয়লেটে যাওয়ার সময়ও চোখ এবং হাত বাঁধা অবস্থায় যম টুপি পরিয়ে নেওয়া হতো। আট বছর ধরে প্রতিদিন এই প্রক্রিয়া চালানো হয়, যার ফলে প্রায় ৪১ হাজার বার তার চোখ ও হাত বাঁধা হয়েছিল।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন।
আযমী লেখেন, বন্দি জীবনে আমাকে যে সেলে রাখা হয়েছিল সেখান থেকে টয়লেটের দূরত্ব ছিল আনুমানিক ৪৫-৫০ কদম দূরে। টয়লেটে যেতে হলে হাতে হাতকড়া পরিয়ে, মোটা কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে, মাথার ওপর থেকে ঘাড় পর্যন্ত যম টুপির মতো কালো মুখোশ পরিয়ে নিয়ে যাওয়া-আসা করতো। পরে অবশ্য আমার অব্যাহত অভিযোগের চাপে মুখোশ পড়ানো বন্ধ করেছিল।
তিনি আরও বলেন, আমি হিসাব করে দেখেছি, ২ হাজার ৯০৮ দিনে (৬৯ হাজার ৭৯৪ ঘণ্টায়) মোট প্রায় ৪১ হাজার বার আমার চোখ-হাত বাঁধা হয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে বোধ হয় এই রেকর্ড আর নেই।
ওই পোস্টে তিনি কোরআনের একটি আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে আরও লিখেন, কত নির্মম হতে পারে জালেমরা! মহান আল্লাহ বলেছেন— ‘আমি জুলুম হারাম করেছি’। আখেরাতে এই জালিমদের কী পরিণতি হবে বলে মনে করেন?
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে গুম হন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আজমের পুত্র আব্দুল্লাহিল আমান আযমী। দীর্ঘ আট বছরের অন্ধকার বন্দিজীবন শেষে ২০২4 সালের ৬ আগস্ট রাতে তিনি মুক্তি পান। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন তিনি এই বন্দিজীবন থেকে মুক্তি পান।
এ ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন সময় তিনি তার বন্দিজীবনের বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে আসছেন।