কলকাতা আ.লীগ নেতাকর্মীদের অভয়ারণ্য, সম্রাটের বাসায় কাদের!

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চল এখন এসব নেতাকর্মীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। সেখানে তারা গোপন বৈঠকসহ নানা কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত আমার দেশ পত্রিকার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগের শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং প্রভাবশালী নেতারা ভারতে অবস্থান করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নাশকতার পরিকল্পনা করছেন। এ তালিকায় রয়েছেন ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ ইসমাইল হোসেন সম্রাট, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, মমিনুল হক সাঈদ, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ আরও অনেকে। এছাড়া বেশ কয়েকজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও সেখানে উপস্থিত রয়েছেন বলে জানা গেছে।

গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, এসব নেতারা ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর তত্ত্বাবধানে থেকে বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টায় লিপ্ত। তাদের মূল লক্ষ্য সরকারকে বেকায়দায় ফেলা এবং রাজনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া।

কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চল, বিশেষত নিউটাউন, পার্ক সার্কাস, ভাঙড়, ও চিনার পার্কে আওয়ামী নেতাদের তৎপরতা দেখা গেছে। নিউটাউনের অভিজাত এলাকা সঞ্জীবা গার্ডেন এবং পুর্তি ভেদার বিলাসবহুল ফ্ল্যাটগুলোতে বাংলাদেশি নেতারা অবস্থান করছেন। এসব এলাকায় তাদের চলাচল কালো কাচের গাড়ি এবং দামী পার্ক-রেস্টুরেন্টের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ থাকে।

আমার দেশ এর প্রতিবেদন আরও জানায়, নিউটাউনের ইকো পার্ক, অ্যাকোয়াটিকা পার্ক, এবং টাইমস স্কয়ারে আওয়ামী নেতাদের দেখা গেছে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং প্রিসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ আরও অনেকেই এইসব অঞ্চলে সক্রিয়। এছাড়া পারুল আক্তার, অসীম কুমার উকিল, ও সাবেক মন্ত্রী নূরে আলম চৌধুরীর মতো প্রভাবশালী নেতারাও কলকাতায় অবস্থান করছেন।

নিউটাউনের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে এই নেতাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সূত্র মতে, তারা বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে এলেও রাজনৈতিক আশ্রয়ের নামে ভারতের আইনের ফাঁকফোকর ব্যবহার করছেন। নিরাপত্তার খাতিরে তারা প্রধান সড়ক থেকে দূরের ফ্ল্যাট বা বাড়ি পছন্দ করছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাদের এই তৎপরতা দুই দেশের সম্পর্ক ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

Scroll to Top