কোহিনূরের পর বিশ্বের সবচেয়ে দামি হীরা দরিয়া-ই-নূর বিদেশে পাচার করেছিল শেখ হাসিনা

ঢাকার নবাবি আমলের মহামূল্যবান হীরকখণ্ড ‘দরিয়া-ই-নূর’ নিয়ে রহস্য আজও অমীমাংসিত। ২০১৬ সালে সোনালী ব্যাংক সদরঘাট শাখার ভল্ট থেকে দরিয়া-ই-নূর উধাও হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন অনেকে। তবে এই হীরা বিদেশে পাচার করা হয়েছে এমন অভিযোগ ওঠে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।

প্রায় ১৮২ ক্যারেট ওজনের গোলাপি আভাযুক্ত দরিয়া-ই-নূর বিশ্বে বিরল এবং অন্যতম মূল্যবান হীরকখণ্ড। এটি সপ্তদশ শতাব্দীতে মারাঠা রাজার কাছ থেকে হায়দরাবাদের নবাবরা কেনেন। এরপর এটি শিখ মহারাজ রণজিৎ সিংহের হাত ঘুরে ব্রিটিশদের হাতে পৌঁছায়। ১৮৫২ সালে ঢাকার জমিদার খাজা আলিমুল্লাহ এটি কিনে আনেন।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এটি সোনালী ব্যাংকের ভল্টে সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে ভল্ট পরিদর্শনের তাগিদ দেওয়া হলেও বিষয়টি আর অগ্রসর হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে এই তদন্ত থমকে যায় এবং সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, হীরাটি বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

নানা সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কোহিনূরের মতো দরিয়া-ই-নূরও হাত বদল হয়ে সর্বশেষ শেখ হাসিনার হাত ধরে বিদেশে চলে যায়। প্রমাণ হিসাবে ব্যাংকের ভল্ট খুলে হীরার অস্তিত্ব যাচাইয়ের চেষ্টা হলেও বিগত হাসিনা সরকার এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি দেখায়নি।

দরিয়া-ই-নূর নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, নবাব সলিমুল্লাহ এটি আনুষ্ঠানিক পোশাকের অংশ হিসেবে ব্যবহার করতেন। পাকিস্তান আমলে এটি ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানে রাখা হয় এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এটি সোনালী ব্যাংকে আসে।

বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি উঠেছে, দরিয়া-ই-নূরের প্রকৃত অবস্থান খুঁজে বের করে জনগণের কাছে সত্য প্রকাশ করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শতকোটি টাকা মূল্যের এই হীরা পুনরুদ্ধার হলে দেশের ঐতিহ্য রক্ষা পাবে।

এক সময় যার মূল্য ছিল ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, সেই দরিয়া-ই-নূর আজ ঐতিহাসিক এবং আর্থিক দিক থেকে দেশের অমূল্য সম্পদ। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির ইঙ্গিতে এ রহস্যের জট আজও খুলছে না।

উল্লেখ্য: নবাব পরিবারের আর্থিক দুরবস্থার কারণে দরিয়া-ই-নূরসহ অনেক সম্পদ সোনালী ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখা হয়েছিল। আজও এই হীরার প্রকৃত অবস্থান নির্ধারণে দেশের জনগণ সঠিক তথ্যের অপেক্ষায়।

Scroll to Top