গত ৭ মাস আগেই বিয়ে হয় ফারজানা আক্তারের (১৮)। কিন্ত বিয়ের কিছুদিন পরেই নানা বিষয় নিয়ে স্বামীর নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাকে। আর এভাবে দীর্ঘদিন যাওয়ার পর অবশেষে না ফেরার দেশেই পাড়ি জমাতে হলো ঐ গৃহবধুকে। জানা গেছে, গতকাল সোমবার (২৯ নভেম্বর) নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের হাসনাবাদ বাজারের ‘আখি বিউটি পার্লার ও ট্রেনিং সেন্টার’ এর ভেতর থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে ফারজানাকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবার-পরিজন।
এ সময় পুলিশ ওই তরুণীর স্বামী ও বিউটি পার্লারের মালিক লোকমান মিয়াকে আটক করেন। লাশটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিহত ফারজানা উপজেলার পিপি নগর গ্রামের বিল্লাল মিয়ার মেয়ে। তিনি ডৌকারচর বেলায়েত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। সাত মাস আগে রাজশাহীর ওমর আলীর ছেলে লোকমান মিয়ার সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ে হয়। এরপর পর থেকেই হাসনাবাদ এলাকায় লোকমানে মালিকানাধীন আখি বিউটি পার্লার ও ট্রেনিং সেন্টারে একটি কক্ষে থাকতেন তারা দুজন।
পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ফারজানার ওপর নিয়ার্তন চালিয়ে আসছিল তার স্বামী লোকমান। সোমবার দুপুরে বিউটি পার্লারের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফারজানার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান স্থানীয় একজন। পরে তিনি পুলিশকে খবর দেন। ওই সময় ঝুলন্ত লাশের পাশেই বসে ছিলেন লোকমান। পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করেন এবং স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
নিহতের মা শাহিদা বেগম জানান, বিয়ের পর থেকেই তার মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল লোকমান। স্বামীর ভয়ে এ বিষয়ে পরিবাকে কিছুই জানাতো না ফারজানা। ১৫ দিন আগে পেটে লাথি মেরে ফারজানার গর্ভের সন্তানকে তার স্বামী হত্যা করেন বলে দাবি করেন শাহিদা।
এদিকে সংবাদ মাধ্যমকে এতথ্য নিশ্চিত করে রায়পুরা থানার এসআই আব্দুল জব্বার জানিয়েছেন, খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে মৃতদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখেন তিনি। এরপর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় স্বামী লোকমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।