ঋণ দেয়ার কথা বলে ৫৫ হাজার টাকার মুরগি খেলেন ব্যাংক ম্যানেজার

পোল্ট্রি ব্যবসা বাড়ানোর জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চেয়েছিলেন এক খামারি। কিন্তু ঋণ তো পাননি, উল্টো ৫৫ হাজার টাকার মুরগি খাওয়াতে হলো ব্যাংকের ম্যানেজারকে।

ভারতের ছত্রিশগড়ের বিলাসপুর জেলার মাস্তুরিতে এ ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী খামারি রুপচাঁদ মনোহর জানান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (এসবিআই) মাস্তুরি শাখা থেকে ১২ লাখ রুপি ঋণ নিতে চেয়েছিলেন তিনি। এজন্য ব্যাংকের ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

রুপচাঁদ অভিযোগ করেন, ঋণ অনুমোদনের অজুহাতে ম্যানেজার তার কাছ থেকে প্রতি শনিবার দেশি মুরগি চাইতেন। দুই মাস ধরে ম্যানেজারকে ৩৯ হাজার রুপির মুরগি সরবরাহ করেন তিনি। মুরগি কেনার জন্য অন্য গ্রাম থেকেও সংগ্রহ করতে হয়েছে, যার বিল তার কাছে সংরক্ষিত আছে বলে তিনি দাবি করেন।

কিন্তু সময় গড়ানোর পর তিনি বুঝতে পারেন, ম্যানেজারের তার ঋণ অনুমোদনের কোনো ইচ্ছা নেই। শুধু তাকে প্রতারণা করে মুরগি খাওয়ার ফন্দি করেছেন। এমনকি ম্যানেজার খাওয়া মুরগির দাম পরিশোধেও অস্বীকৃতি জানান।

বাধ্য হয়ে রুপচাঁদ মনোহর স্থানীয় সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট (এসডিএম) অফিসে অভিযোগ করেন। তিনি হুমকি দেন, ম্যানেজারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা না নিলে তিনি এসবিআই শাখার সামনে অনশন করবেন এবং আত্মহত্যা করবেন।

ঘটনাটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-তে প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, মুরগির বিল এবং ঋণ প্রক্রিয়ায় হওয়া প্রতারণার অভিযোগ তদন্তাধীন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন এখন ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।


জুলাই বিপ্লব নিয়ে প্রদর্শনী করে প্রশংসায় ভাসছে শিবির

‘গণঅভ্যুত্থানের পূর্বাপর’ শীর্ষক দেশের প্রথম প্রদর্শনী আয়োজন করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টাশালী অডিটোরিয়ামে ৭ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা এই প্রদর্শনী দর্শনার্থীদের মাঝে দারুণ সাড়া ফেলেছে।

প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মৃতি। শহীদদের রক্তমাখা চিত্র, আওয়ামী লীগের শাসনামলের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের চিত্রসহ ছাত্রশিবিরের ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে। প্রদর্শনীর একটি দেয়ালে শহীদদের নাম দিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে এবং মাঝখানে বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে ‘জন্মভূমি অথবা মৃত্যু’। প্রদর্শনীতে জুলাই বিপ্লব ও শহীদদের জীবন নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি বারবার সম্প্রচার করা হয়েছে।

এতে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ উপস্থিত হন। আয়োজনে কোনো প্রবেশ ফি রাখা হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ বলেন, “জুলাই বিপ্লব প্রতিটি বাংলাদেশি নাগরিকের। আমরা গত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসনের প্রত্যেক ভুক্তভোগীর কাহিনি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। এতে যেমন বেগম খালেদা জিয়ার কথা এসেছে, তেমনি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার জামায়াত নেতাদের কথাও তুলে ধরা হয়েছে। লক্ষ্য একটাই—বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট শক্তি যেন আর কখনো মাথাচাড়া দিতে না পারে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলন ও মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, “জুলাই বিপ্লবের শহীদরা বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাদের চেতনাকে জাগ্রত রেখে সেই আকাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। এই প্রদর্শনী সেই চেতনা জাগিয়ে তোলার প্রয়াস।”

প্রদর্শনীতে ইতালির ডকুমেন্টারি ফটোগ্রাফার গ্যাব্রিয়েল ইশেকনি উপস্থিত হয়ে বলেন, “এমন ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগের প্রয়োজন। বিভক্তির পরিবর্তে ঐক্যের পক্ষে আসা উচিত। এ ধরনের আয়োজন বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করবে।”

ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও শহীদদের ত্যাগের স্মৃতিকে জাগ্রত রাখতে এমন আয়োজন সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে।