শিগগিরই চালু হচ্ছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি ফ্লাইট

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু হতে যাচ্ছে শিগগিরই। এই তথ্য জানিয়েছেন করাচিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার এস এম মাহবুবুল আলম। তিনি জানিয়েছেন, এই উদ্যোগ দুই দেশের সম্পর্ক এবং ব্যবসায়িক যোগাযোগকে আরও দৃঢ় করবে।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এ খবর প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, হায়দ্রাবাদ চেম্বার অব স্মল ট্রেডার্স অ্যান্ড স্মল ইন্ডাস্ট্রির (এইচসিএসটিএসআই) সহযোগিতায় হায়দ্রাবাদে দুই দেশের আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের জন্য একটি প্রদর্শনীর আয়োজনের পরিকল্পনাও রয়েছে।

এছাড়া মাহবুবুল আলম জানান, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বার্ষিক বাণিজ্য প্রদর্শনীতে পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণ সহজতর করতে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা হবে।

ডেপুটি হাইকমিশনার আরও বলেন, বাংলাদেশের পণ্য বর্তমানে ৮০টি দেশে রপ্তানি হয়ে বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আয় করছে। তবে পাকিস্তানের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে এই দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা আরও উন্নত করা সম্ভব।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত এইচসিএসটিএসআই-এর সভাপতি মুহাম্মদ সেলিম মেমন বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। তিনি দুই দেশের সরাসরি কার্গো জাহাজ যোগাযোগ শুরুর বিষয়টিকে একটি মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের পাকিস্তানের প্রদর্শনীতে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, ঢাকায় পাকিস্তানি পণ্য আমদানিতে যেসব সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, সেগুলো সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এজন্য একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি।

পাকিস্তানের সঙ্গে এই নতুন উদ্যোগ উভয় দেশের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।


হাসিনাকে ফেরাতে নীলনকশা দিল্লিতে, গোয়েন্দারা সংস্থাগুলোর তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

জুলাই-আগস্ট মাসে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর, অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতিমুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশের লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং রাজনৈতিক মহলে দেড় শতাধিক গুরুতর অভিযোগ জমা পড়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এর মধ্যে ১০ সাবেক মন্ত্রীসহ ২৫ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তবে, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরানোর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী ও বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে একটি বিশেষ চক্র নতুন পরিকল্পনা করছে। প্রতিবেশী দেশে অবস্থানরত কিছু ষড়যন্ত্রকারী বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে ২০ জানুয়ারির পর ভয়াবহ নাশকতার পরিকল্পনা করছে।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তদন্তে উঠে এসেছে, দিল্লির কিছু স্থানে বাংলাদেশী হিন্দু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভারতীয় কট্টরপন্থী সংগঠন আরএসএস এবং অন্যান্য সংগঠন ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক এবং তার নেতৃত্বাধীন টিম এই পরিকল্পনায় জড়িত। তাদের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বিভেদ ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

৯ ডিসেম্বর, দিল্লির প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়ায় একটি বড় জমায়েতের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই সমাবেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা হিন্দু শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে বলে জানা গেছে। সেখানে আরএসএস সদস্যরাও উপস্থিত থাকবে।

বাংলাদেশ সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে। নয়াদিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন ইতিমধ্যে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করে শিক্ষার্থীদের এসব কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে অনুরোধ জানিয়েছে। একই সঙ্গে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভারতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের তালিকা সংগ্রহ এবং তাদের কার্যক্রমের ওপর নজরদারি চালানোর উদ্যোগ নিচ্ছে।

এদিকে, আদালত শেখ হাসিনার বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং আগের সব বক্তব্য মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে।

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে, যাতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এড়ানো যায়।