এবার ভারতের ব্যাপারে যে শক্ত পদক্ষেপ নিল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বর্তমানে উত্তেজনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। পতাকা অবমাননা, অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রচার এবং ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। এসব পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশনে ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা কার্যক্রম সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) গোপন এক দাপ্তরিক চিঠির মাধ্যমে কলকাতা ডেপুটি হাইকমিশনকে ভিসা প্রদানে সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ সরকার। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। যদিও এখনো এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

এই সিদ্ধান্ত স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে প্রথমবারের মতো একটি শক্ত অবস্থান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এর আগে ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ত্রিপুরা দূতাবাসের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ। তবে দিল্লি ও আসাম মিশনের ক্ষেত্রে এখনো এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কলকাতা ও ত্রিপুরার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে দিল্লি ও আসাম মিশনেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।

৪ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে কলকাতার ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি হাইকমিশনার সিকদার মো. আশরাফুল রহমান এবং ত্রিপুরার অ্যাসিস্ট্যান্ট হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদকে ঢাকায় ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়। তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় যোগ দেন।

ত্রিপুরায় হামলার ঘটনায় ভারত দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং অভিযুক্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে উভয় দেশকেই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। সংখ্যালঘু ইস্যু ও অন্যান্য ঘটনার প্রভাব দুই দেশের সম্পর্ককে আরও ঝুঁকির মুখে ফেলছে।


বিএনপির জনসভার মঞ্চে পলকের শ্যালিকা, সমালোচনার ঝড়

নাটোরের সিংড়া উপজেলা বিএনপির জনসভায় মঞ্চে দেখা গেছে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালিকা ও দীপ মেডিকেলের মালিক ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টিকে। তিনি সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনুর ভাতিজি এবং পলকের স্ত্রী আরিফা জেসমিনের চাচাতো বোন। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।

বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ভাড়া নিয়ে ক্লিনিক পরিচালনা করেছেন এবং পলকের প্রভাবের কারণে জয় বাংলা অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন। এমন একজনের উপস্থিতি বিএনপির জনসভার মঞ্চে দলের কর্মীদের ক্ষুব্ধ করেছে।

নেতাকর্মীদের দাবি, গত ১৫ বছর ধরে দলের সাধারণ কর্মীরা নির্যাতনের শিকার হলেও সুবিধাবাদী ব্যক্তিরা সবসময় সুযোগ পেয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলাম আনুর সম্পর্কের কারণে ডা. ফারজানাকে বিএনপির সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ।

শুক্রবার বিকেলে সিংড়া উপজেলা বিএনপির এই জনসভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।

এ বিষয়ে ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি বলেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন। চিকিৎসক হিসেবে সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার কারণেই তিনি বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের সময় সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। তবে সেদিন ক্লিনিক থেকে চেম্বারে যাওয়ার পথে পরিচিত কয়েকজনের ডাকে তিনি মঞ্চে কিছু সময় অবস্থান করেন।

অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু এ বিষয়ে বলেন, কে তাকে মঞ্চে ডেকেছে, তা তিনি জানেন না।