‘ডিম কি আমি মেশিন দিয়ে তৈরি করব?’ বাণিজ্য উপদেষ্টার পাল্টা প্রশ্ন

রাজধানীতে ডিমের বাজারে চরম সংকট দেখা দিয়েছে। পাইকারি আড়তগুলোতে ডিম সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারেও ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ ক্রেতারা খালি হাতে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন।

ডিমের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে, কিন্তু তাতেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সরবরাহ। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, খামার থেকে নির্ধারিত মূল্যে ডিম সরবরাহ না হওয়ায় তারা পাইকারি বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।

তেজগাঁওয়ের আড়তগুলোতে গত রোববার থেকে ডিম বিক্রি বন্ধ। ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রশাসনের নির্ধারিত মূল্যে ডিম বিক্রি করতে গেলে তারা লোকসানে পড়বেন। ফলে তারা জরিমানার প্রতিবাদে ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য আড়তেও একই পরিস্থিতি।

এ অবস্থায়, রাজধানীর কারওয়ানবাজার পরিদর্শনে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন ডিমের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন। ডিমের দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গে তিনি রসিকতার সুরে বলেন, “ডিম কি আমি মেশিন দিয়ে তৈরি করব?”

সোমবার সন্ধ্যায় কারওয়ানবাজারে চাল, ডাল, মুরগি, তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে সালেহউদ্দিন এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি ডিমের সরবরাহ ঘাটতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, “ডিমের সরবরাহ কম, সারে চার থেকে পাঁচ কোটি ডিম প্রতিদিন উৎপাদন হয়, কিন্তু সাপ্লাই ঠিক না থাকায় দাম বেড়েছে।”

এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর কৃষিপণ্য বিপণন অধিদপ্তর খামার, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিমের ‘ন্যায্য মূল্য’ নির্ধারণ করেছিল। তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, খামারে নির্ধারিত দামে ডিম পাওয়া যাচ্ছে না, ফলে তারা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই বাড়তি দামে বিক্রির জন্য জরিমানা করায়, প্রতিবাদস্বরূপ তেজগাঁওয়ের আড়তে ডিম বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে।

ডিমের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে খুচরা ক্রেতারা সমস্যায় পড়েছেন। চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন আড়তেও ডিমের সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় খুচরা পর্যায়ে ডিম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন বলেন, “বন্যা এবং অতিবৃষ্টির কারণে ডিমসহ বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন কমেছে, যার প্রভাবে বাজারে সরবরাহ কমেছে এবং দাম বেড়েছে।”

সালেহউদ্দিন ব্যবসায়ীদেরকে ‘যৌক্তিক’ লাভ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “উৎপাদনকারী, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের মূল্য ব্যবধান যেন সহনীয় পর্যায়ে থাকে তা আমরা মনিটর করছি। কেউ যদি অতিরিক্ত মুনাফা করতে চায়, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম উদ্দিন এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান এ সময় উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।

Scroll to Top