যুবলীগ কর্মীকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে প্রহার করলো বিএনপি নেতারা

বরগুনার তালতলী উপজেলায় এক যুবলীগ কর্মীকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিদ্যুতের খুঁটিতে বাঁধা সুমনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। গত রোববার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তালতলী বাজারে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।

নির্যাতনের শিকার যুবলীগ কর্মী জাফরুল হাসান সুমন (৩০) তালতলী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. মোসলেম উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে।

সূত্রমতে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর তালতলী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনের একটি বিরোধকে কেন্দ্র করে সেখানে মারধরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার জের ধরে দুলাল হাওলাদার বাদী হয়ে ৪৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় সুমনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

রোববার সন্ধ্যায় সুমন তালতলী বাজার থেকে তার বাবা-মায়ের জন্য ওষুধ কিনে গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিলেন। তার গাড়ি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল হকের বাড়ির সামনে পৌঁছালে, শহীদুল হক, তার দুই ছেলে নাঈম ও অন্তুসহ বিএনপির একদল নেতাকর্মী তাকে গাড়ি থেকে জোরপূর্বক নামায়। এরপর তাকে সড়কের পাশে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্মমভাবে মারধর করে। নির্যাতনের পর তারা সুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সুমনকে প্রায় ২০-২৫ মিনিট ধরে নির্যাতন করা হয়। আশপাশের লোকজন ভয়ে কিছু বলতে সাহস পায়নি। শেষে তারা সুমনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

নির্যাতিত সুমন বলেন, “বাবা-মায়ের জন্য ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে শহীদুল হক, তার দুই ছেলে এবং ১০-১২ জন বিএনপির নেতাকর্মী আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন চালায়। পরে তারা আমাকে পুলিশে সোপর্দ করে।”

সুমনের বাবা, মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন হাওলাদার, এই ঘটনাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “আমার ছেলেকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে এবং মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। আমি দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।”

তালতলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল হক এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে বলেন, “গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিএনপির দুই কর্মী ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের হাতে আহত হয়েছে। সেই ঘটনার জের ধরেই সুমনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধরের অভিযোগ মিথ্যা।”

এ বিষয়ে তালতলী থানার ওসি মো. কালাম খাঁন বলেন, “মারধরের অভিযোগ পেয়ে সুমনকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। তবে তাকে খুঁটির সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়নি। সুমন একটি মামলার আসামি। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।”

Scroll to Top