সুসময়ের ‘মধু’ খেতে চান ছাত্রদলের বুড়ো নেতারা: তৈরি হয়েছে অস্বস্তি

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বরিশাল মহানগর, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির নেতারা এখন নতুনভাবে সক্রিয় হয়েছেন। রেজাউল করিম রনি, মাহফুজুল আলম মিঠু এবং রেজা শরীফ, যারা এই তিন কমিটির সভাপতি, দীর্ঘদিন ছাত্রত্ব শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করেছেন। কেউ বিয়েও করেছেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাঁরা আবারো তৎপর হয়েছেন, যা নিয়ে ছাত্রদলের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। সংগঠনের নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে কয়েকজনকে বহিষ্কারও করা হয়েছে এবং মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটিগুলো বাতিল করে নতুন নেতৃত্বের দাবি উঠেছে।

২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট গঠিত মহানগর ও জেলা ছাত্রদলের কমিটিগুলোর মেয়াদ ছিল দুই বছর। প্রায় এক হাজার নেতা এই দুই কমিটিতে যুক্ত ছিলেন, কিন্তু কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের অনেকেই এখনও পদ ধরে রেখেছেন। এসব কমিটিতে বিবাহিত, মাদক কারবারি ও প্রবাসী ব্যক্তিদেরও জায়গা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। একইভাবে ২০১৬ সালে গঠিত বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ সদস্যদের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ রয়েছে।

মহানগর কমিটিতে জিতু হত্যা মামলার আসামি রেজাউল করিম রনিকে সভাপতি করায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। রনি বর্তমানে আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে, যার ভিত্তিতে তাঁকে বহিষ্কারের দাবিও উঠেছে।

জেলা কমিটির সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠু এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসানের বিরুদ্ধেও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের মেহেন্দীগঞ্জের প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতা রাজীব আহসানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কামরুল এখন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদকও।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন কোনো কার্যক্রম না থাকলেও ৫ আগস্টের পর ছাত্রদল আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ক্যাম্পাসে দুটি গ্রুপ আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে—একটি রেজা শরীফের অনুসারী, অন্যটি জান্নাতুল নওরীনের। রেজা শরীফ নতুন কমিটির পক্ষে এবং নবীনদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির জানান, ৫ আগস্টের পর সংগঠনের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে এবং মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের কাজ চলছে। সংগঠনবিরোধী কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Scroll to Top