পাঁচ দিনের জন্য ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ঘোষণা

মণিপুরে মেইতে সম্প্রদায় ও কুকি-জো উপজাতিদের মধ্যে চলমান সহিংসতার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ দিনের জন্য ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। মণিপুরে চলমান উত্তেজনা ও সংঘর্ষের মধ্যে প্রথমবারের মতো ড্রোন এবং রকেট হামলার খবর পাওয়া গেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংঘাত নিয়ন্ত্রণে সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে রাজ্যজুড়ে টহল দেওয়া হচ্ছে।

ইন্টারনেট বন্ধের সিদ্ধান্তটি এসেছে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর শঙ্কায়। রাজ্য সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১০ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টা থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টা পর্যন্ত ইন্টারনেট সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় লিজ লাইন, ভিসেট (VSAT), ব্রডব্যান্ড এবং ভিপিএন পরিষেবাসহ ইন্টারনেট এবং মোবাইল ডাটা পরিষেবাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শান্তি বজায় রাখতে এবং অসামাজিক কার্যক্রম রোধে ইন্টারনেট বন্ধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মিথ্যা গুজব ছড়ানোর ঝুঁকি থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সংঘর্ষে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় গত সপ্তাহে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। বিদ্রোহীরা রাজ্যের বিভিন্ন অংশ অবরোধ করে রেখেছে এবং ড্রোন হামলার দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে।

তিন জেলায় কারফিউ জারি
মণিপুরে সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) থেকে ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, এবং থৌবল জেলায় সর্বাত্মক কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের পরেই এই তিন জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। তবে কারফিউর আওতা থেকে স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, পেট্রোল পাম্প, গণমাধ্যমকর্মী এবং আদালতের কার্যক্রম মুক্ত থাকবে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থতার অভিযোগে পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিজিপি) ও নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে অপসারণের দাবিও উঠেছে।


ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও ক্যাশিয়ার

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ ভল্ট থেকে প্রায় ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা গায়েব হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) ব্যাংকটির শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া মতলব উত্তর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। অভিযুক্ত দীপংকর ঘোষ মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামের বাসিন্দা।

মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছানোয়ার হোসেন মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২৯ আগস্ট ব্যাংকের অফিসার দীপংকর ঘোষ অনুপস্থিত ছিলেন। তার মোবাইলে কল করলে তিনি জানান, বাবা অসুস্থ থাকায় তিনি দেরি করে অফিসে আসবেন। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও অফিসে না আসায় পুনরায় ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তার স্বামী ঢাকার বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন।

দিনের শেষ ভাগে দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে না আসায় শাখা ব্যবস্থাপক সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে ১ সেপ্টেম্বর পুলিশের উপস্থিতিতে ব্যাংকের ভল্ট খোলা হয়, যেখানে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া যায়। ব্যাংকের ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী, ভল্টে এক কোটি দুই লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা থাকার কথা থাকলেও মাত্র ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা পাওয়া যায়।

মামলায় আরও বলা হয়েছে, দীপংকর ঘোষ মাঝে মাঝে কাঁধে ঝোলানো একটি ব্যাগ নিয়ে অফিস আসতেন এবং সেটি নিয়ে অফিস ত্যাগ করতেন। ব্যাংকের ক্যাশিয়ার হিসেবে তাঁর কাছে ভল্টের চাবি থাকত, যা তিনি কৌশলে ব্যবহার করে এই বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া বলেন, “আমি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছি, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন।”

পুলিশ জানিয়েছে, দীপংকর ঘোষসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।