৩১ বছর পর ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেয়ার আগে বাংলাদেশকে সতর্ক করেনি ভারত

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ডাম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাঁধ খুলে দেওয়ার আগে বাংলাদেশকে সতর্ক করেনি ভারত। ৩১ বছর পর বুধবার (২১ আগস্ট) সকালে ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের তিনটি বাঁধের একটি বা গেট খুলে দেওয়া হয়। এ বাঁধ খুলে দেয়ায় হঠাৎ করে গোমতী ও ফেনী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। জলাবদ্ধতার আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়েছেন অনেকেই। তবে দীর্ঘদিন পর বাঁধ খুলে দেয়ার বিষয়ে ভারতে থেকে বাংলাদেশের বন্যা পূর্বভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে কোন তথ্য আসেনি।

জানতে চাইলে বুধবার (২১ আগস্ট) বিকালে বন্যা পূর্বভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী উদয় রায়াহান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, উজানে পানি বৃদ্ধির তথ্য আমাদের কাছে আসে। তবে ডুম্বর বাঁধ খুলে দেয়া হয়েছে-এমন কোন তথ্য আমাদের কাছে আসেনি। উজানে পানি বৃদ্ধির খবর পেয়ে আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি।

জানা গেছে, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুজন। বন্যার কারণে ডাম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে বাংলাদেশে পানি ঢুকছে।

ডুম্বুর জলাধারের গেটগুলি শেষবার ১৯৯৩ সালে খোলা হয়েছিল৷ আবার ২০২৪ সালে তা খোলা হল। গত সোমবার দুপুর থেকে তিনদিন ধরে ত্রিপুরা উত্তর জেলার সদর ধর্মনগরে মুষলধারে বৃষ্টি চলছে। এই বৃষ্টিপাতে ধর্মনগর শহরের বিভিন্ন এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বিঘার পর বিঘা জমি প্লাবিত হওয়ায় জলের নীচে চলে গিয়েছে। এলাকার কৃষকদের মাথায় হাত পড়ে গেছে।

বুধবার বিকেলে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। জলাবদ্ধতার আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়েছেন অনেকেই। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, কোথাও বাঁধের ক্ষতি হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে, ভারী বর্ষণ ও ভারতীয় থেকে আসা ঢলে সীমান্তবর্তী চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাকড়ী নদীর বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে আছে সেখানকার লাখো মানুষ। নাঙ্গলকোট উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের ডাকাতিয়া নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো আজ ২ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছে। গোমতী নদীর তীরবর্তী বুড়িচং উপজেলার কিং বাজেহুরা গ্রামে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। সদর উপজেলার চাঁনপুর এলাকায় আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয়েছে শতাধিক পরিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোমতী নদীর তীরবর্তী দেড় শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্রোতে ভেঙ্গে গেছে গ্রামের সংযোগ সড়ক। পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষি জমি।

Scroll to Top