Friday , November 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / রাতে আব্বুর চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে যায়, দরজার ফাঁক দিয়ে দেখি দুজন আব্বুকে ধরে রেখেছে : আপন

রাতে আব্বুর চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে যায়, দরজার ফাঁক দিয়ে দেখি দুজন আব্বুকে ধরে রেখেছে : আপন

একজন বাবা তার ছেলের চোখের সামনে নৃশংসভাবে প্রান হারাচ্ছেন। আর একজন বাচ্চা ছেলে সেটা দেখছে। না পারছে তার বাবাকে বাচাঁতে না পারছে নিজে সহ্য করতে। কতটা নিষ্ঠুর দৃশ্য। এমনই একটি ঘটনা ঘটে রেজাউল ইসলামের ৯ বছরের ছেলে আপন ইসলামের সাথে। ঘুমন্ত বাচ্চাটির ঘুম ভাঙে বাবার প্রান হারানোর পূর্বের করূণ চিৎকারে। যখন সে মায়ের কোলে ঘুমাচ্ছিল। ছেলেটি নিজেই জানালো কিভাবে তার বাবার প্রান কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

রাতে মায়ের কাছে দুই ভাই ঘুমিয়ে ছিলাম। রাত ৩টার দিকে আব্বুর চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে যায়। প্রথমে মা উঠে চলে যায়। এরপর উঠে দরজার ফাঁক দিয়ে দেখি সাদা পাঞ্জাবি পরা দুজন আব্বুকে ধরে রেখেছে। সারা শরীর দিয়ে রক্ত ঝরছে। এরপর আব্বুকে ছাদে উঠানোর চেষ্টা করা হয়। তারপর তারা চলে যায়। এরপর শুনি আব্বু মারা গেছেন।

শনিবার সকালে এভাবেই বাবাকে হত্যার ঘটনার বর্ণনা দেয় নিহত রেজাউল ইসলামের ৯ বছরের ছেলে আপন ইসলাম।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দীঘারপাড়া গ্রামে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে রেজাউল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত রেজাউল ইসলাম উপজেলার দীঘারপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি পেশায় দিনমজুর। নিহত রেজাউলের আপন ও জীবন নামের দুটি শিশু সন্তান রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে গ্রামের একটি দোকান থেকে বাড়ি ফিরে আসে রেজাউল। এরপর রাত সাড়ে ৩টার দিকে চিৎকার শুনে তার বাড়িতে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত রেজাউল ইসলামের মা আমেনা খাতুন বলেন, আমার সোনার কোনো শত্রু ছিল না। কেন তাকে হত্যা করা হলো। কাজ ছাড়া সে কিছু বুঝতো না। আমার সোনা কি আর ফিরে আসবে? বলতে বলতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি।

নিহতের ভাই আনোয়ার হোসেন জানান, রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ঘুমিয়ে ছিলেন। এরপর রাত সাড়ে ৩টার দিকে চিৎকার শুনে ছুটে এসে দেখি রেজাউলের গলা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তার গলায় ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এরপর তাকে উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রতিবেশী ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, রেজাউল কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। মাঠে কাজ করা ছাড়া সে কিছু বুঝতো না। কিন্তু তাকে কেন হত্যা করা হলো সেটা তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা. মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, দিনমজুর রেজাউলকে হত্যার কারণ জানা যায়নি। তবে তদন্তের পর হত্যার কারণ জানা যাবে। পুলিশ হত্যার কারণ খুঁজে বের করতে কাজ শুরু করেছে।

সব শেষে মারা গেলেন রেজাউল, পড়ে রইলো ২ টি বাচ্চা আর বৌ। ছেলের সামনে নৃশংসভাবে মারা হলো তার বাবাকে। যে কিনা কাজ করত মাঠে, যা দিয়ে চলত তার সংসার। ছিলেন না জড়িত কোনো রাজনীতির সাথে। তাহলে কেনো এমন মৃত্যু, কেনইবা এমন নৃশংসভাবে মরতে হলো বাবাকে তার নিজ ছেলের সামনে! এসব কোনো প্রশ্নের উত্তর কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। মারার কারন কেওই বলতে পারছেনা। পুলিশ জানিয়েছে তদন্ত শুরু হয়েছে।

About

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *