ঢাকাই সিনেমার অন্যতম ব্যস্ত অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ। নায়ক সালমান শাহের অসমাপ্ত কাজ ‘বুকের ভিতর আগুন’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় আগমন করেন তিনি। তবে পরবর্তীতে ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ সিনেমার মাধ্যমে দর্শকদের মনে দাগ কাটতে সক্ষম হন গুণী এই অভিনেতা। বর্তমানে তার ঝুলিতে রয়েছে অগুণিত ব্যবসায় সফল সিনেমা।
তবে গত বছর দুই আগে এক অনাকাঙ্খিত ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল এই অভিনেতাকে। তা হলো- লোকসভা নির্বাচনে প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অপরাধে ২০১৯ সালে ভারত ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন তিনি। অবশেষে সেই জটিলতা কাটিয়ে চলতি সপ্তাহে ভারতের ভিসা পেয়েছেন তিনি। ভারতে যাওয়ার সব জটিলতা কেটে গেলো। কেমন লাগছে? ফেরদৌস বলেন, খুবই ভালো লাগছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বুঝতে পেরেছে এটা আমার অনিচ্ছাকৃত ভুল ছিল। ভুল করেছি, ভুলের মাশুল দিয়েছি।
মানসিকভাবে প্রায়শ্চিত্ত করেছি। ভারত আমার গত দুই দশকের কাজের জায়গা।
১৯৯৮ সাল থেকে সেই ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ থেকে কাজ শুরু। সেখানে যেতে পারছিলাম না নিষেধাজ্ঞা কারণে। অনেকের আশীর্বাদ এবং চেষ্টা ছিল যাতে ভিসা হয়ে যায়। সেখানকার জনপ্রিয় নায়িকা ঋতুপর্ণা তো যার সঙ্গে দেখা হতো তাকেই বলতো, আমার বন্ধুর ভিসাটা ঠিক করে দেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যখন দেখা হতো বলতেন, তুমি চিন্তা করো না। আমি দেখবো। তারপরও এটা যেহেতু আরেক দেশের সরকারের ব্যাপার ছিল, তারা যতক্ষণ পর্যন্ত না বুঝবে কিছু করা সম্ভব ছিল না।
অবশেষে তারাও বুঝেছে। ধন্যবাদ জানাই ভারত সরকারকে। যতদূর জানি এ ব্যাপারে আপনার দুই মেয়েরও মন খারাপ ছিল? তাদের প্রতিক্রিয়া কী? ফেরদৌস বলেন, আমার দুই মেয়ে তো ভীষণ খুশি। কারণ আমি শুটিংয়ে গেলে ওরা প্রায়ই চলে আসতো। সিনেমা দেখতো, ঘুরতো, শপিং করতো। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেটা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই ওদের খুব মন খারাপ ছিল। বিভিন্ন জায়গায় আলোচনা হতো, পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হতো। তাই ওদের জন্য আমার বেশি কষ্ট হতো। সিদ্ধান্ত নিয়েছি মেয়েদের নিয়েই প্রথম ভারতে যাবো।
আগামী মাসে যাওয়ার একটা পরিকল্পনা আছে। ভারত ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞার কারণে তো আপনার অনেক ক্ষতি হয়েছে? এ নায়ক বলেন, তাতো বটেই। সবচেয়ে বড় ক্ষতি যেটা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিকে অভিনয় করা হলো না। এই অতৃপ্তি থেকে যাবে আজীবন। আপনার এই ভুল থেকে তো শেখার একটা বিষয় ছিল? ফেরদৌসের উত্তর- হ্যাঁ। এই ভুল থেকে আমার এবং পরবর্তী প্রজন্মের অনেক কিছু শেখার আছে।
তাদেরকে বলবো তারা যেন না বুঝে এরকম কিছুতে না জড়ায়। সবসময় কিছু করার আগে যেন ভাবে। হাতে থাকা ছবিগুলোর কী অবস্থা? ফেরদৌস বলেন, আফজাল হোসেন ভাইয়ের ‘মানিকের লাল কাঁকড়া’র শুটিং শেষের পথে। হৃদি হকের ‘১৯৭১ সেইসব দিন’ সিনেমার ডাবিং চলছে। নূরে আলমের ‘রাসেলের জন্য অপেক্ষা’র কাজও করবো। এছাড়া এ মাসে মিন্টু ভাইয়ের পরিচালনায় নতুন একটা সিনেমার শুটিং হওয়ার কথা আছে। সিনেমার নাম ‘ক্ষমা নেই’।
এদিকে ঢাকাই সিনেমার পাশাপাশি ভারতীয় বাংলা সিনেমায়ও অভিনয় করেও ভক্তদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন ফেরদৌস আহমেদ। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্য রয়েছে- কুসুম কুসুম প্রেম, খায়রুন সুন্দরী, বউ-শাশুড়ির যুদ্ধ, দুই নয়নের আলো, গেরিলা, ইত্যাদি। বর্তমানেও তার হাতে রয়েছে কয়েকটি সিনেমা।