ঢাকাই সিনেমা জগতের অন্যতম কিংবদন্তি ও প্রয়াত অভিনেতা সালমান শাহ। খুবই অল্প সময়ে দর্শকদের মনে জায়গা করে নেয়া অভিনেতাদের মধ্যে তিনি একজন। তবে গুণী এই অভিনেতার আকস্মিক মৃত্যুতে দায়ের করা মামলা নিয়ে আলোচনা কম হয়নি। কিন্তু অবশেষে শত জল্পনা-কল্পনার অবশান ঘটিয়ে দীর্ঘ ২৫ বছর পর মামলাটির কার্যক্রম শেষ হয়েছে। জানা গেল, এরই মধ্যে অভিনেতা সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)-এর দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেছেন আদালত।
রোববার (৩১ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালত পিবিআইর দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন।
পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ মার্ডারের শিকার হননি, পারিবারিক কলহের জেরে তিনি আত্মহনন করেছিলেন।
সালমান শাহের মায়ের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহের আত্মহননের পাঁচটি কারণ উল্লেখ করা হয়। সেগুলো হলো- চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে সালমানের অতিরিক্ত অন্তরঙ্গতা, স্ত্রী সামিরার সঙ্গে দাম্পত্য কলহ, মাত্রাতিরিক্ত আবেগ প্রবণতার কারণে একাধিকবার আত্মঘাতী, মায়ের প্রতি অসীম ভালোবাসা জটিল সম্পর্কের বেড়াজালে পড়ে পুঞ্জীভূত অভিমানে রূপ নেওয়া ও সন্তান না হওয়ায় দাম্পত্য জীবনে অপূর্ণতা।
এদিন চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দেন সালমান শাহের মায়ের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ। একইসঙ্গে সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরীর ভার্চুয়ালি জবানবন্দি নিতে আবেদন করা হয়। আদালত মামলার বাদী উপস্থিত না থাকায় আবেদনটি খারিজ করে দেন।
গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ৬০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেন পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম। এর আগের দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি আলোচিত এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে মৌসুমীর বিপরীতে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন সালমান শাহ। মাত্র ৪ বছরের ক্যারিয়ারে বেশকিছু সফল সিনেমা উপহার দিয়ে কোটি কোটি ভক্তদের মনের মাঝে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। তবে হঠাৎই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রহস্যজনকভাবে মৃ্ত্যুবরণ করেন এই অভিনেতা।