বেশ কয়েক বছর ধরে বিমানবন্দরে মিলছে অবৈধ সোনার চালান। বিদেশ থেকে বিভিন্ন মালামাল বা পন্যদ্রব্যের ভিতরে করে সোনা অবৈধভাবে দেশে আনার বিষয়টি প্রায় ধরা পড়ে। তারা এই সোনা আনার জন্য নানা ধরনের কৌশল নিয়ে থাকে। বিভিন্ন উপায়ে কোন কিছুর ভিতরে করে আনা হয় সোনার বিস্কিট, সোনার চকলেট, তরল সোনা বা ধাতব কোনো কিছুর ভেতর করে। কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে সতর্ক থাকলেও অনেক সময় ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যায় পাচারকারীরা। দেশে এই প্রথমবার আমদানিমুখী গার্মেন্টস এক্সেসরিজ এর ভিতরে পাওয়া গেল স্বর্ণের বার।
চীন থেকে আসা কাপড়ে লুকিয়ে রাখা প্রায় আট কোটি টাকা মূল্যের ১১ কেজি (৯৬ বার) সোনা জব্দ করেছে ঢাকা এয়ারফ্রেট শুল্ক গোয়েন্দারা। রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) শুল্ক গোয়েন্দাদের বিশেষ অভিযানে ডেলিভারি গেট থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন- ফিরোজ আলম (২৫) ও মোহাম্মদ নিয়াতুল্লাহ (৪০)।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের (উত্তরা) এয়ার ফ্লাইট ইউনিটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। মোঃ আব্দুর রউফ।
মহাপরিচালক জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শুল্ক গোয়েন্দাদের বিশেষ অভিযানে তাদের আটক করা হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, তালিকায় এয়ারওয়েভের মাধ্যমে আমদানি করা কাপড়ের ভাঁজে দুটি সাদা প্লাস্টিকের মোড়ানো প্যাকেট পাওয়া গেছে। দুটি প্যাকেট খুলুন এবং ধাতব বোতামগুলির মধ্যে কালো স্কচ টেপে মোড়ানো ৪টি বান্ডিল খুঁজে পান। বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ১৬ বান্ডিলে মোট ৬৪টি সোনার বার পাওয়া গেছে। এটির ওজন ৭.৪২ কেজি (প্রতিটি ১১৬ গ্রাম)। এরপর আরেকটি আমদানি করা কাপড় থেকে ১টি সাদা প্লাস্টিকের মোড়ানো প্যাকেট পাওয়া যায়। প্যাকেট খুললে ধাতব বোতামের ভিতরে কালো স্কচ টেপে মোড়ানো ২টি বান্ডিল পাওয়া যায়।
আব্দুর রউফ জানান, ১৬ বান্ডিল থেকে মোট ৩২টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়েছে। এটির ওজন ৩.৭১২ কেজি (১১৬ গ্রাম প্রতিটি) এবং এর মোট আনুমানিক মূল্য ৮ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, সরকার আরোপিত শুল্ক ফাঁকি দিতে স্বর্ণের বারগুলো দেশে পাচার করা হয়। এ ক্ষেত্রে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের তৎপরতা ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে।
গার্মেন্টস এক্সেসরিজ এর ভিতরে করে এই প্রথমবার স্বর্ণ চালান পাওয়া গেল। পাচারকারীরা অতি সূক্কৌশলে, বিভিন্ন কালারের মোরক ব্যবহার করে, অতি দক্ষতার সঙ্গে, স্বর্ণের বার দেশে ঢুকাচ্ছিল।
প্রসঙ্গত, কর্মকর্তা আরো বলেন, গার্মেন্ট শিল্প আমাদের দেশের বৈদেশিক অর্থ অর্জন করার একটি অন্যতম খাত। গার্মেন্টস শিল্প জনশক্তিকে ব্যবহার করে, বিশ্বদরবারে দেশকে পরিচয় করিয়েছে। গার্মেন্টস এক্সোসরিজ নিয়ে এরকম যদি চলতে থাকে তাহলে একটি দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতির কারন হয়ে পড়তে পারে। সেজন্য প্রতিরোধ করতে সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে.