সারা বিশ্বের চলমান পরিস্থিতির মধ্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বাংলাদেশসহ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু বাংলাদেশের বেশির ভাগ নাগরিক এই নির্দেশ মানছেন না। তাই বেড়ে যাচ্ছে মৃ’ত্যু ঝুঁকি। এ বিষয়টি বেশি লক্ষ্য করা যায় গ্রাম অঞ্চল ছাড়াও শহরাঞ্চলে। তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যারা রয়েছেন তারা ও পুলিশ প্রশাসন এ বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চলমান একুশে বই মেলায় এক নারীকে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে প্রশ্নের জবাবে সৃষ্টি হয় নানা বিতর্ক। আর এই বিতর্কের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়।
যেখানে দেখা যায়, মাস্ক ছাড়া বইমেলায় ঘুরে বেড়ানোর অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে এক মেয়েকে। আর সেই মেয়ে নির্বাহী মেজিস্ট্রেটের সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছেন।
জানা গেছে, মাস্ক না পরার কারণে জরিমানা করা ওই নারীর নাম নাজিফাতুষি। তিনি একজন মডেল ও অভিনেত্রী। টুসি ২০১৪ সালে একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা থেকে আলোচনায় উঠে আসেন তুষি । তিনি ২০১৬ সালে আইসক্রিম চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন। নেটওয়ার্কের বাইরে’ নামে জনপ্রিয়তা পাওয়া ওয়েবফিলমেও কাজ করেছেন নাজিফা।
১৯ ফেব্রুয়ারি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা রানী মাস্ক না পরার জন্য দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারায় তুশিকে ২০০ টাকা জরিমানা করেন।
তিনি বেশ কয়েকদিন ধরে বইমেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন স্বাস্থ্যবিধি কার্যকর করার জন্য এবং গত এক সপ্তাহে তার আদালত বেশ কয়েকজনকে জরিমানা করেছে।
এদিকে ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অপরাধ করার পরও কেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন, তা নিয়ে নানা কটাক্ষের স্বীকার হন এ অভিনেত্রী।
অবশেষে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন নাফিজা তুষি। তিনি জানান, ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করার সময় তিনি মেজাজ হারিয়ে ফেলেন এবং এ সময় তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশও করেছেন অভিনেত্রী।
তুষি বলেন,ভিডিও ভাইরাল হয়েছে; অনেকেই এটা নিয়ে কথা বলছেন। আমার একটা পরিচয় আছে, আমার একটা ব্যক্তিগত জীবন আছে। আমার ভুল হতে পারে, এটা যে কেউ করতে পারে. তবে তিনি আমার সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ক্যামেরা শুট করা হচ্ছিল। আমি বারবার অনেক মানুষের সামনে, অনেক ক্যামেরার সামনে হয়রানির শিকার হয়েছি। তখন আমি চিৎকার করে বললাম, আমাকে এভাবে হয়রানি করছেন কেন? আমাকে জরিমানা করেন, আমি পরিশোধ করছি. মেলায় আরও মানুষ ছিল কোনো মাস্ক পরে নাই। এমনকি অনেক পুলিশও মাস্ক পরেন না। আমি সেটাও বলছি না। কিন্তু আমার অনুমতি ছাড়া ক্যামেরায় তুলে নেবেন কেন?
তিনি বলেন, আমার বান্ধবীরাও তর্কে এসেছিল, ওদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে। যদি কোনো শাস্তি দেন তো সাইডে গিয়ে কথা বলেন। কিন্তু সে আমার পাশে না গিয়ে বারবার কথা বলে। আমি দেখছিলাম, সামনে ভিডিও করা হচ্ছে।আমি জরিমানাও পরিশোধ করেছি।
প্রসঙ্গত, একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচনে অংশ নিতে শনিবার মেলায় গিয়েছিলেন তুষি। তার ব্যাগে মাস্ক রেখেঘোরাঘুরির সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নজরে পড়ে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে সাজা দেন। এ সময় তুষি বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। দায়িত্বরত টিভি সাংবাদিকরা ভিডিওটি রেকর্ড করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে ম্যাজিস্ট্রেটকে জিজ্ঞেস করেন কেন তাকে জনসমক্ষে হয়রানি করা হচ্ছে।
দেশের সকল নাগরিকের উচিৎ সারা বিশ্বের চলমান খারাপ পরিস্থিতির সময় নিজেকে এবং অন্যকে সাহায্য করা। যার জন্য সকলের উচিৎ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং অন্যকে এ বিষয়ে সচেতন করা। মাস্ক পরা বাধ্যতামূক করার বিষয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা রানীর মতো অনেকেই জরিমানা করেন।