দেশের দরিদ্র, নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্তদের উপর আরোপকৃত করের নির্ধারিত মানকে বর্তমান দেশের মহামারির কথা বিবেচনা করে স্থিতিশীল করার পরামর্শ দিয়েছেন বিইএ। এর পাশাপাশি মহামারিকে কেন্দ্র করে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক ক্ষতিকে সমন্বয় করতে উচ্চবিত্তদের উপর করের পরিমানকে বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতি। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় এই বিষয়ে প্রস্তাবনামূলক বক্তব্য তুলে ধরেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম।
করোনার কারণে উদ্ভূত বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে জাতীয় বাজেটের তহবিল সংগ্রহে দরিদ্রদের ওপর সরাসরি করের বোঝা না বাড়িয়ে ধনীদের ওপর করের হার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতি (বিইএ)। ২০২২- ২৩-এর প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোঃ আইনুল ইসলাম কিছু পরামর্শ দেন। বিইএ বলেছে যে, সরকারকে অবশ্যই অবিলম্বে নিশ্চিত করতে হবে যে ধনী, ধনী ব্যক্তি এবং সংস্থা, যারা তাদের সম্পদ এবং লাভের মূল্যকে অবমূল্যায়ন করে সঠিক কর প্রদান করে না, তারা যেন সঠিক পরিমাণে কর প্রদান করে।
বাজেট প্রণয়নে সরকারকে চার মাত্রার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের ওপর জোর দিতে বলেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতি। মহামন্দা ও করোনার কারণে বিশ্বের সব দেশই এখন অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও রাজনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। এমতাবস্থায়, আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট কোনও সংকোচন ছাড়াই একটি বিস্তৃত এবং ব্যাপকভাবে প্রণয়ন করা উচিত। যা দরকার তা হল আয়, সম্পদ ও সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন। অর্থাৎ ধনী থেকে দরিদ্র, নিঃস্ব ও নিম্নবিত্তের দিকে প্রবাহিত হওয়া উচিত।
অ্যাসোসিয়েশনের প্রস্তাবে দরিদ্রদের উপর প্রত্যক্ষ করের বোঝা না বাড়িয়ে ধনীদের উপর সম্পত্তি কর বাড়ানো, সুপার-ডুপার ধনীদের উপর করের হার বাড়ানো এবং ৮০ শতাংশ শেয়ার বন্ডের মালিক কিছু ব্যক্তি ও সংস্থার বৃহৎ বিনিয়োগের উপরও বলা হয়েছে। সম্পদ কর ধার্য করতে হবে। এ ছাড়া অতিরিক্ত মুনাফার ওপর কর আরোপ করতে হবে এবং কালো টাকা ও পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে জোরালো ব্যবস্থা নিতে হবে।
আমদানি শুল্কের হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে, দেশীয় শিল্পায়ন এবং দেশীয় কৃষির স্বার্থ বিবেচনা করে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ খাত এবং উপ-খাতের উপর আরোপিত মুক্তবাজার দর্শনের বিপরীতে সুরক্ষাবাদী নীতি ও দর্শন প্রয়োগ করতে হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশের সার্বিক প্রেক্ষাপটের কথা মাথায় রেখে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রাক-বাজেট আলোচনায় কর প্রনয়নকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচনা এবং যুগোপযোগী পরামর্শ প্রদান করেন। অর্থনৈতিক মহামন্দা এবং মহামরিকে কেন্দ্র করে দেশের সকল স্তর এখন যে বিপর্যয়ের সম্মুক্ষিন সেই অবস্থায় আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটকে কোনোমতেই সংকোচিত না করে বৃহদাকারে সম্প্রসারন করার পরামর্শ দেন তবে বাজেট প্রনয়নের সময় অবশ্যই দরিদ্রদের কথা মাথায় রেখে, এমনটিই পরামর্শ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতি।