বাংলাদেশে দিনে দিনে সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোতে বেড়েই চলেছে দালাল চক্র। এসব দালালদের বেশির ভাগ দেখা যায় সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোর চত্বরে। বিশেষ করে ভূমি অফিস, কোর্ট এলাকা, পাসপোর্ট অফিস ইত্যাদি জায়গায় এদের বেশি সমাগম দেখা যায়। মানুষকে সাহায্য করার নামে নানাভাবে ছলে-বলে কৌশলে তাদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়। এমনি এক দালাল চক্রের কারসাজির বিষয় উঠে এলো আলোচনায়।
পটুয়াখালীর বাউফল নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনে অফিস খুলেছে কিছু দালাল। নির্বাচন অফিসে কাজের জন্য আসা লোকজন দালালদের মাধ্যমে সেবা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্ধারিত টাকা না দিলে সেবা পান না সাধারণ মানুষ। ভুক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাচন অফিসকে নির্যাতন কার্যালয় বলে অভিহিত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে মোশাররফ তালুকদার নামে এক ব্যক্তি অফিস খুলেছেন। তাকে সাহায্য করছে আরও কয়েকজন দালাল। নির্বাচন অফিসে কাজে গেলে অফিস সহকারীরা প্রথমে তাকে মোশাররফ তালুকদারের কাছে যেতে বলেন। এর পরে আপনাকে প্রতিটি কাজের জন্য তার সাথে চুক্তি করতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ও ভোটার স্থানান্তরসহ বিভিন্ন কাজে তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হয়। টাকা পরিশোধের পর মোশাররফ অফিসে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন। অফিসের দ্বিতীয় তলায় সিঁড়িতে মোশাররফের জন্য একটি নির্ধারিত চেয়ারও রয়েছে।
ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম নামে একজন জানান, মোশাররফ নাম সংশোধনের জন্য অফিসে গিয়ে সব কিছু করার কথা বলে তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। আমি জানতাম মোশাররফ একজন নির্বাচনী কর্মকর্তা।
তবে মোশাররফ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি এই অফিসের সদস্য নই। আমার পরিচিত কেউ কাজ করতে আসলে আমি তাদের সাহায্য করি।
এদিকে, আপনি যদি প্রয়োজনীয় পরিমাণ অর্থ প্রদান না করেন তবে আপনাকে মাসের পর মাস কাজের জন্য যেতে হবে। ভুক্তভোগী কহিনুর বেগম বলেন, আমি এবং আমার স্বামী এক বছর আগে ভোটার বদলির আবেদন করেছিলাম। এখন পর্যন্ত কোন ফলাফল নেই। অফিসে এসে আমাকে গালিগালাজ করা হয়।
সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা আতাহার মাতুব্বর বলেন, এখানে এসে সবাই নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছে। তাই এটাকে “নির্যাতন অফিস” বলি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, জনবলের অভাবে শুধু মোশাররফ তালুকদারকে নির্বাচনের সময় ঠিকাদারি অফিস সহকারী হিসেবে রাখা হয়েছে। তিনি কোনো অফিসিয়াল কাজ করতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসব দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম এ বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নিবেন বলে জানিয়েছেন। তবে ভুক্তভোগিরা অফিসে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে দালালের সাথে আগে কথা বলতে বলা হয়, এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাছ থেকে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। এবং সাধারণ জনগণ উপজেলা নির্বাচন অফিসে পরামর্শ নিতে গেলে তাদের অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করা হয় এ বিষটি এড়িয়ে যায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম।