দিনে দিনে রাষ্ট্র হয়ে পড়েছে দুর্নীতিবাজদের আখড়া। এমন কোন খাত নেই যেখানে দুর্নীতি হচ্ছে না। কিছুদিন আগেই দুদকের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এর চাকরি চলে যাওয়ায় তার একটা বড় প্রমাণ। দুর্নীতি যারা রূখবে তারাই দুর্নীতির সাথে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। হাসপাতালে দুর্নীতি, অনিয়ম, বিশৃঙ্খলার চিত্র, বিনা খরচে চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা নেবার পর চিকিৎসার নামে রোগী ও স্বজনদের এক প্রকার জিম্মি করে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও পাওয়া যায় প্রায় প্রতিনিয়ত।
সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে র্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে এখন দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক মন্ত্রী ও উপদেষ্টার মধ্যে ফোনালাপের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘দেশে এখন দুর্নীতির মহোৎসব চলছে।
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এই লুটপাট ও দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের মেয়র-চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে কোনো মন্ত্রী-এমপি নেই, যারা দুর্নীতির সুযোগ নিচ্ছেন না। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ গোটা প্রশাসন দুর্নীতির এই চক্রে জড়িয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, সংবিধান ও রাষ্ট্রের অভিভাবকরা এখন খোদ বিচার বিভাগও দুর্নীতিতে জড়িত বলে অভিযোগ করছেন।
দুর্নীতিতে জড়িয়ে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন এখন অজ্ঞ। তাদের অপকর্ম এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, শত চেষ্টা করেও তারা আর দমন করতে পারছে না। কোনো না কোনোভাবে তা প্রকাশ্যে আসছে। ভার্চুয়াল জগতে ভাসমান। ফাঁস হচ্ছে নানা অপকর্মের কুৎসিত ছবি। বড় বড় দুর্নীতিবাজদের মুখোশ খসে পড়ছে। সম্প্রতি একজন মন্ত্রী ও উপদেষ্টার মধ্যে ফোনালাপের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “এই ফোনালাপ সরকারের দুর্নীতির বাস্তব চিত্রে পরিণত হয়েছে। এটা আজ জাতির কাছে প্রমাণিত সত্য। বিএনপিসহ দেশবাসী এরই মধ্যে তদন্ত দাবি করেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকারের কোনো পদক্ষেপের কথা আমরা জানি না। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি আবারো দাবি করেছে, দুর্নীতি নিয়ে সরকারের দুই শক্তির মধ্যে কথোপকথন অস্বীকার করেননি আইনমন্ত্রী।
তাই বিলম্ব না করে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, ‘দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি ও জনগণ এটা মেনে নিতে পারে না।’ বিএনপি দাবি করছে দুর্নীতির সঙ্গে বিচার বিভাগকে জড়িত করার স্বীকৃত অপরাধ। পৃথকভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিএনপি তদন্ত প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার স্বার্থে ঘটনার সাথে জড়িত সকলের পদত্যাগ দাবি করছে। অবিলম্বে তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনাটি বিচারের আওতায় আনা হোক। সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব চাঁদপুর কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণে শিক্ষামন্ত্রীর আত্মীয়স্বজন, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দুর্নীতির অভিযোগের কথাও উল্লেখ করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, “বিএনপিসহ দেশবাসী এই ঘটনার বিষয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত দাবি করেছে।” কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। সরকার এখনো নির্বাক ও নির্বিকার।
সরকারদলীয় মন্ত্রীসহ, কিছু অসৎ সরকারি আমলাদের দুর্নীতির কথা দেশবাসীর অজানা নয়। দেশবাসী ইতিমধ্যে দুর্নীতির বিচার চেয়ে ও বিচার পাইনি। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। সরকার এখনও নীরব ভূমিকা পালন করে আসছে দুর্নীতিবাজদের পক্ষ হয়ে।