জয় বাংলাকে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হিসেবে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ। গত রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রীপরিষদের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। ২০২০ সালে হাই কোর্টের একটি রায়ে আছে যেখানে বলা হয়েছে যে, জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে বিবেচনা করতে হবে, এবং এইটাকে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, সকল সাংবিধানিক কর্মচারী, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল কর্মসূচিতে জয় বাংলা স্লোগানকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে দিতে হবে। রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষ থেকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগানে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এ সময় তিনি বলেন, দেশের সকল সাংবিধানিক কর্মচারী, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মসূচিতে জাতীয় স্লোগান হিসেবে জয় বাংলা স্লোগান দিতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আজ মন্ত্রিসভায় একটি ইস্যু আসছে। সেটা হলো ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগানে পরিণত করা। মন্ত্রিসভায় এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০২০ সালে হাইকোর্টের একটি রায়ও আছে- ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে গণ্য করতে হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। মন্ত্রিসভায় আলোচনার পর মন্ত্রিসভা থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে প্রচার করার সিদ্ধান্ত হয়। আমরা অবিলম্বে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিব. “প্রজ্ঞাপন করতে কত সময় লাগবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “দুই দিন, তিন দিন, চার দিনের বেশি সময় লাগবে না।” ‘জয় বাংলা’ কোথায় বলতে হবে, সে বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রায়ে তিন বা চারটি বিভাগ কথা আছে।
সাংবিধানিক পদাধিকারী, সমস্ত রাজ্যের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাষ্ট্রীয় বা সরকারি অনুষ্ঠানের শেষে এই কথা বলবেন। মাদ্রাসাসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো সভা-সেমিনার, সমাবেশ বা কোনো সমাবেশ হলে সেখানে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে হবে। ‘যদি কোনো অনুষ্ঠান হয়, সমাবেশ সরকারি-বেসরকারি, যারা জয় বাংলা স্লোগান দেবে। এটি মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত,” বলেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে ২০১২ সালে হাইকোর্টে রিট করেন বশির আহমেদ ও আবদুল বাতেন। এরপর ১৯ মার্চ ২০২০। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুন আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের দ্বৈত বেঞ্চ জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হওয়া উচিত বলে রায় দেন।তিন মাসের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের নির্দেশনা থাকলেও তা হয়নি।
জাতীয় স্লোগান কোথায় কিভাবে ব্যাবহার করা হবে সেটা নিয়ে চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা। জাতীয় স্লোগান হিসেবে জয় বাংলা কোথায় কখন কিভাবে ব্যবহার হবে সে বিষয় কথা বলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, সকল সাংবিধানিক পদধারী ব্যাক্তি, এবং সকল রাস্ট্রিয় কর্মকর্তা কর্মচারী রাষ্ট্রীয় কাজের শেষে এবং স্কুল,কলেজ, মাদ্রাসার সকল আনুষ্ঠানিক কর্মকান্ড শেষে জয় বাংলা স্লোগান দিতে হবে, এই রকমের মোট তিন থেকে চারটি ক্যাটাগরির কথা উল্লেখ রয়েছে রায়ে, বলে জানান তিনি।