যত দিন যাচ্ছে ততদিন বাড়ছে রাজনৈতিক দলগুলোর নতুন কৌশল। আগামি নির্বাচন মাথায় রেখে বর্তমান সরকারের বিপরীতে নতুন কৌশলে সফল হচ্ছে কিনা তা যাচাই করতে গিয়ে দেখা দিচ্ছে বিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভাঙন। আগামি নির্বাচনে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করতে একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ২০ দল। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম এবং এলডিপির অলি আহমেদ ছিলেন দলগুলোর মধ্যে অন্যতম।
দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৃহত্তর ঐক্য গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। দলের নেতারা ইতিমধ্যে অন্তত ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছেন।
আগামী শুক্রবার আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে সংলাপে বসবেন বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা। এরই অংশ হিসেবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমেদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
অলির মহাখালী ডিওএইচএসের বাসায় সাড়ে তিন ঘণ্টার অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান এবং এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ। এলডিপির মহাসচিব রেদওয়ান আহমেদ যুগান্তরের কাছে বিষয়টি স্বীকার করলেও তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
তবে বৈঠকে দীর্ঘদিনের ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। আগামী দিনে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দুই দলের নেতারা। আন্দোলন ও বৃহত্তর ঐক্যের বিষয়ে অলি আহমদের পরামর্শে সহযোগিতা চেয়েছেন বিএনপি নেতারা। আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন বলেও তিনি বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন। ২০ দলীয় জোটে এলডিপির আরেকটি অংশকে স্বীকৃতি না দেওয়ারও দাবি জানান অলি আহমেদ। জবাবে বিএনপি নেতারা তাকে প্রতিশ্রুতি দেন যে তারা বিষয়টি সমাধান করবেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন অলি আহমেদ।
তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নির্দলীয় সরকারের দাবির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তিনি বিএনপি নেতাদের বলেন, এটি বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লাগবে। বরং এখনই জাতীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলন করা উচিত। দীর্ঘ বৈঠকে দুই দলের নেতারা অতীতের বিভিন্ন বিষয়ের কথা মনে করিয়ে দেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন নিয়ে বিএনপিতে নাখোশ ২০ দলের শরিকরা। এ সময় এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের নেতৃত্বে ‘জাতীয় মুক্তিমঞ্চ’ নামে একটি বিকল্প জোটও গঠন করা হয়। পরে বিএনপির সঙ্গে অলির দূরত্ব তৈরি হয়। পরে এলডিপির একটি অংশ সরে গেলেও দুটি অংশই ২০ দলীয় জোটে থেকে যায়। এ সময় এলডিপি ভেঙে যাওয়ায় বিএনপির ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন অলি আহমদ।
এদিকে সমস্যার মূল কারণ হিসেবে পাওয়া যায় দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০ দলের বৈঠক নিয়ে এলডিপি ও বিএনপির মধ্যে মতভেদ হওয়ায় নতুন একটি জোট গঠিত হয়। কিন্তু এই নতুন দলের জোট গঠনে দ্বিমত পোষনে এলডিপি ৩ অংশে বিভক্ত হয়। এমনটি ঘটে যাওয়ায় এলডিপি অলি আহমদের মনক্ষুন্নতা হয় বিএনপির উপর।