সাস্থের সাবেক ডিজি ডঃ মুহাম্মদ আবদুল কালাম আজাদ সম্প্রতি ফেসেছিলেন দুদকের মামলায়। রোগীদের কাছ থেকে অবৈধ টাকা নিয়ে কারাগারে ছিলেন সাবেক এই ডিজি। জামিনের জন্য আবেদন করেছিলেন আদালতে, তবে কি হয় তা নিয়েছিল সংশয়। অবশেষে স্থায়ী জামিন মিললো তার, এমনটাই খবর পাওয়া গেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন
রোববার (২৩ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দেন।
রোববার আসামিদের উপস্থিতিতে এ মামলার তদন্তভার গ্রহণের কথা ছিল আদালতে। আবুল কালাম আজাদসহ পাঁচ আসামি জামিনে আদালতে হাজির হন। এ সময় আবুল কালাম আজাদের আইনজীবী স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
তবে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহেদ ওরফে শাহেদ করিমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়নি। তাই আদালত চার্জশিট গ্রহণের তারিখ পিছিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি করেন।
দুদকের আদালত পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
আবুল কালাম আজাদ ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহেদ ওরফে শাহেদ করিম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক ডা. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক মো. শফিউর রহমান ও গবেষণা কর্মকর্তা মো. মোঃ দিদারুল ইসলাম। আসামিদের মধ্যে শাহেদ কারাগারে এবং বাকিরা জামিনে রয়েছেন।
গত বছর আবুল কালাম আজাদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।
অভিযোগপত্রে অভিযোগ করা হয়েছে যে অভিযুক্ত রিজেন্ট হাসপাতালকে লাইসেন্স নবায়ন না করেই একটি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছিল একে অপরের সাথে যোগসাজশ করে, একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৯৩৯ কোভিড রোগীর নমুনা বিনামূল্যে পরীক্ষা করে। যেখান থেকে তারা রোগী পিছু তিন হাজার পাঁচশ টাকা করে মোট এক কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা করে অবৈধভাবে পুরস্কার হিসেবে পান।
অভিযোগপত্রে আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে, নিয়ন্ত্রক হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখার চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয় এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা মাসিক ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা দাবি করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি খসড়া সমঝোতা স্মারক পাঠানোর উদ্যোগ নেয়।
আসামিদের বিরুদ্ধে সর্বমোট তিন কোটি ৩৪ লাখ ছয় হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন। আবুল কালাম আজাদকে সেখানে আসামি করা হয়নি। তবে তদন্তে তার নাম উঠে আসায় অভিযোগপত্রে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
জামিন মিললেও যে সাজা মওকুফ হবে না সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যতই হোক আইন সবার জন্য সমান। তাইতো আপাতত তাকে জামিন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। তবে পূর্ণ সাজা তার জন্য কি অপেক্ষা করছে সেটা এখনো দেখার বাকি রয়ে গেছে।