সম্প্রতি হঠাৎ করেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের একটি অডিও রেকর্ডকে কেন্দ্র করে যেন পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস জুড়ে বইছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। ইতিমধ্যে তার পদত্যাগের দাবিতে রীতিমতো সোচ্চার হয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশেষ করে, ছড়িয়ে পড়া ঐ অডিওতে তাকে মন্তব্য করতে দেখা গেছে যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের কেউ সহজে স্ত্রী হিসেবে নিতে চায় না। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শুস্ট) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর আবারও বিতর্কে নেমেছেন। ক্যাম্পাসে চলমান পরিস্থিতির মধ্যে গত মঙ্গলবার (18 জানুয়ারি) বিতর্কিত মন্তব্যটি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে, যা বর্তমানে তার পদত্যাগের দাবিতে গুঞ্জন চলছে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া অডিও ক্লিপের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকরা। উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত তিন শিক্ষার্থীও অডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকরা জানান, গত বছর শাবিপ্রবির সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। বিভিন্ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তারা হলটি ৩৬৫ দিন খোলা রাখার দাবি জানান এবং ছেলে-মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রবেশের সময়সীমা যেন আরোপ করা না হয়। এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের এক নেতার বরাত দিয়ে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এ মন্তব্য করেন।
অডিওতে উপাচার্যকে বলতে শোনা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় সারারাত খোলা রাখতে হবে, অবশ্যই এই দাবি এসেছে এবং এটা জঘন্য দাবি। আমরা মুখ দেখাতে পারিনি। এখানে আমাদের ছাত্রনেতারা বলছেন, জাহাঙ্গীরনগরের মেয়েদের কেউ সহজে বউ হিসেবে নিতে চায় না। কারণ, তারা সারারাত ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু আমি চাই না আমরা যারা এত ভালো ছাত্র তারা বিখ্যাত শিক্ষকদের সাহায্যে এখানকার সুন্দর বিভাগগুলো থেকে স্নাতক হতে পারি।
শাবিপ্রবি উপাচার্য আরও বলেন, ওই জায়গা কেউ চায় না, কিন্তু কোনো অভিভাবক চায় না। এখন আমরা কাউকে বললে তোমার বাবা-মা কাউকে ডাকবে। তখন আপনি সংযমের সাথে বলবেন, না, না, এটা হবে না, দেখো, সে হয়রানি করছে। এটা সবার নৈতিক দায়িত্ব, আপনারও নৈতিক দায়িত্ব এই মেয়ে কেন স্যারকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত সময় দিল।
সম্প্রতি গত কয়েকদিন ধরেই শাবিপ্রবির উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের ঐ অডিওকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মাঝে শুরু হয়েছে বেশ শোরগোল। এরই মধ্যে তাকে পদত্যাগের দাবি রীতিমতো রাস্তায় নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। একজন শিক্ষক হিসেবে তার কাছ থেকে এমন আচরণ কখনও প্রত্যাশা করেননি কেউ।