বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জীবিকার লক্ষ্যে পাড়ি জমাচ্ছে অসংখ্য নাগরিক। সরকার-বেসরকারি নানা পন্থা অবলম্বন করে বাংলাদেশীরা বিদেশে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে অনেকেই দালাল চক্রের কবলে পড়ছে। এবং অর্থ হারিয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে। সরকারি ভাবে বিদেশে যাওয়ার জন্য সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। যারা কিনা নানা কৌশল অবলম্বন করে প্রবাসীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমানের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। গত তিন বছরে সিন্ডিকেটের হাতিয়ে নেওয়া মোট অর্থের পরিমান উঠে এলো প্রকাশ্যে।
সিন্ডিকেট সদস্যরা গত তিন বছরে মালয়েশিয়ায় ২,৭৫,০০০ কর্মী পাঠিয়েছেন। এই তিন বছরে গুরুত্বপূর্ণ এই খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ‘হাতিয়ে’ নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে বায়রা-যুগ্ম সমন্বয় ফ্রন্টের নেতারা এ তথ্য জানান। তাদের অভিযোগ, ২০১৬ সালের জিটুজি প্লাস চুক্তির মাধ্যমে সিন্ডিকেটের আবির্ভাব। রিক্রুটিং এজেন্সিকে ভাড়াসহ ব্যবসা থেকে বঞ্চিত করা। বায়রা নেতারা আরও অভিযোগ করেন যে সিন্ডিকেটের সদস্যরা অভিবাসী শ্রমিকদের সরকার নির্ধারিত ফি দিয়ে কয়েকগুণ মালয়েশিয়া যেতে বাধ্য করে। তদুপরি, সিন্ডিকেট সদস্যরা ১২ লাখ অভিবাসী শ্রমিককে ভুয়া চিকিৎসা দিয়ে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন বায়রার সভাপতি ড. মোহাম্মদ ফারুক। তিনি বলেন, ২০১৯ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রম রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। এরপর ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় দেশটির সঙ্গে অভিবাসী শ্রমিক রপ্তানির জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এটি দেশের সাথে একটি নতুন শ্রমবাজার তৈরি করেছে।
এটি অভিযোগ করেছে যে সিন্ডিকেট, যেটি ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ার অভিবাসী কর্মীদের কাছ থেকে অর্থ লুণ্ঠন করেছে, নতুন চুক্তির সময় কৌশলগতভাবে দুই দেশের নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করেছিল এই শর্তে যে মালয়েশিয়া সরকার রপ্তানিকারকদের নির্বাচন করার ক্ষমতা বজায় রাখবে। বাংলাদেশী কর্মীবাহিনী। এই অবস্থা আবার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুযোগ তৈরি করে। সংগঠনের পক্ষ থেকে বৈধ লাইসেন্স ও বৈধ ব্যবসা তুলে ধরে ড. মোহাম্মদ ফারুক বলেন, আমাদের দাবি খুবই সাধারণ। সকল বৈধ শ্রমিক রপ্তানিকারকদের মালয়েশিয়ায় শ্রম রপ্তানির সুযোগ থাকতে হবে। বায়রার সাধারণ সম্পাদক মোস্তারা মাহমুদ বলেন, “২০১৯ সালের আইন অনুযায়ী, আমাদের সরকার শ্রমিকদের লাইসেন্স ইস্যু করবে।” তবে মালয়েশিয়া সরকার সিদ্ধান্ত নেবে কে ব্যবসা করবে। আমি মনে করি এটি অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য। আমার দেশ থেকে কে কাজ করবে তা আমরা ঠিক করব। কেন মালয়েশিয়া সরকার বা অন্য কোন সরকার। বায়রা নেতারা জানান, ২৫টি এজেন্সির একটি সিন্ডিকেট গঠন করা হয়েছে। ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ান সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত ১০ জনই আবার জড়িত।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার প্রবাসীদের সুবিধার্থে দালাল চক্র দমনে নানা ধরেনর পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। এবং বিদেশে যাওয়ার জন্য ইচ্ছুক ব্যক্তিদের বৈধ পথে যাওয়ার জন্য নানা ধরনের পরামর্শ প্রদনা করছেন। এমনকি এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ভাবেও সাহায্যে-সহযোগিতা করছে সরকার।