বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রম করেছে। এই স্বল্প সময়ে দেশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য রাজনৈতিক দল। তবে দেশের ইতিহাসে পুরানো এবং ব হুল আলোচিত ও জনপ্রিয় দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ এবং বিএনপি। এই দুই দলটি দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। এবং বর্তমান সময়ে সরকারের দায়িত্ব পালন করছে আওয়ামীলীগ দল। এই দল দুটি একে অন্যের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্ধী। প্রায় সময় এই দলের নেতাকর্মীরা একে অন্যের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে বিরোধে জরিতে পড়ে। সম্প্রতি বিএনপি দলের সমালোচনা করে বেশ কিছু কথা জানালেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
গত পাঁচ বছরে বিএনপি-জামায়াত যুক্তরাষ্ট্রে লবিংয়ের জন্য অর্থ দিয়েছে বলে প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি জানান। “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন লবিস্ট নিয়োগের বিষয়ে আমার কাছে প্রথম নথিটি ২০১৫ থেকে অ্যাকিন কোম্পানি অ্যাসোসিয়েটসের সাথে,”। প্রতিমন্ত্রী বলেছেন বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয় ব্যবস্থাপনার সঙ্গে এ সমঝোতা হয়। মাসে ৫০,০০০ ডলার এটি তিন বছর ধরে চলতে থাকে। বছরে ৬ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে। তিন বছরে প্রায় দুই মিলিয়ন ডলার। আমার কাছে ১০টি নথি আছে। এ সময় তিনি সংসদে নথিপত্র দেখান। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনে তাদের হিসাব প্রকাশ করে। বিএনপিকে প্রশ্ন করতে হবে, এই টাকা কি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে নেওয়া হয়েছে নাকি? তা না হলে এতিমদের হ/ত্যা করে বিদেশে পা/চা/র করা হয়েছে। এখানে টাকা ব্যবহার করা হয়েছে কিনা আমরা তদন্ত চাই।
বিশ্ব যত শক্তিশালীই হোক না কেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের ক্ষমতা তাদের নেই উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে দেশের ১৬ কোটি মানুষ। তিনি বলেন, আমাদের সমস্যা থাকলে আমরা সংসদে আলোচনা করব। আমরা রাস্তায় নামবো। আমরা সেখানে সেটার সমাধান করবো।। আমি নির্বাচন কমিশনে যাব। আমি মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যাব। এদিকে পবিত্র কোরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে সত্য ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পবিত্র কোরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি (হারুন) বলেন, জেনেও মিথ্যা আড়াল করবেন না। আমি দাবি করবো তার এই বক্তব্যটি তার রাজনৈতিক জীবনে পালন করছেন কি না তা প্রমাণ করে দেখাবেন।। আপনি যদি নিজেকে একজন সত্যিকারের মুসলিম বলে দাবি করেন, তাহলে সেই মিথ্যাগুলো আড়াল করবেন না। অন্তত আগামীতে এবং ২০২২ সালের এই সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে তার দলের অতীত ও বর্তমান নেতাদের অপকর্ম উন্মোচন করা উচিত। শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, আমরা জানি বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচন বয়কট করেছে। তাহলে আপনি আপনার প্রার্থীকে আমার এলাকা বলছেন কেন? তাহলে আপনি কি দল পরিবর্তন করেছেন? আপনি একটি জাতীয়তাবাদী দল থেকে একটি নতুন রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেছেন কিনা তা আমাদের জানতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন ঠেকিয়েছে। রাজশাহীতে দেখেছি প্রতিটি উপজেলায় বিএনপির প্রার্থী ছিল। এরপরও রাজশাহীর মতো জায়গায় আমার নির্বাচনী এলাকায় নৌকার প্রার্থী ৬টি স্থানে জয়ী হয়েছে। দুটি আসনে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী এবং তার দলের (বিএনপি) একজন নির্বাচিত হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে নজিরবিহীন নির্বাচন হয়েছে। শাহরিয়ার আলম বলেন, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই ইভিএম পাওয়া যায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ পদ্ধতিতেই নির্বাচন হবে বলে পরিকল্পনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মাহবুব তালুকদারের মতো নির্বাচন কমিশনাররাও গতকাল স্বীকার করেছেন যে ইভিএমের মাধ্যমে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক নির্বাচন সম্ভব। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা কীভাবে তারেক রহমানকে অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি বলতে পারে। একজন দণ্ডিত পলাতক আসামি কীভাবে একটি দলের অন্তর্বর্তী সভাপতি হতে পারেন? পবিত্র কোরআনের আলোকে আমি তাকে (হারুন) কাছে এ বিষয়ে জানতে চাই।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া ওয়াশিংটন টাইমসে একটি নিবন্ধ লেখেন। কিন্তু এটি প্রকাশের পর বিএনপি নেতা-কর্মীরা অস্বীকার করেন যে এটি খালেদা জিয়ার লেখা নয়। হারুনকে উদ্দেশ্য করে শাহরিয়ার আলম বলেন, এখন অন্তত তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে পবিত্র কোরআনের আলোকে সত্য কথা বলছেন। আজ সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন: “তাই আমি মিথ্যা বলেছি, আমি মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।” খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ। আমি তার মঙ্গল কামনা করি। তিনি একজন বৃদ্ধ। বাংলাদেশে একটা সমস্যা আছে, কেন জানি আমাদের হৃদয় অসুস্থ মানুষের প্রতি নরম হয়ে যায়। কিন্তু ওই লোকটি আমার দলের নেতাকে গ্রে/নে/ড হা/ম/লা করে সিএমএইচে যেতে দেয়নি, বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করতে দেয়নি।
দীর্ঘ দিন ধরে শারীরিক ভাবে নানা ধরনের জটিলতায় ভুগছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাতীয়তাবাদী বিএনপি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এবং এই দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তারকে রহমান। বর্তমান সময়ে তিনি সপরিবারে লন্ডনে বসবাস করছেন।