Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে বিএনপির মধ্যেই পরস্পরবিরোধী বক্তব্য,ধোয়াসা সত্য-মিথ্যা নিয়ে (ভিডিওসহ)

হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে বিএনপির মধ্যেই পরস্পরবিরোধী বক্তব্য,ধোয়াসা সত্য-মিথ্যা নিয়ে (ভিডিওসহ)

সম্প্রতি হঠাৎ করেই যেন গোটা-দেশজুড়ে আলোচনায় কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) অন্যতম ত্যাগি নেতা আবুল হারিছ চৌধুরী। তার মৃত্যুর খবরকে কেন্দ্র করে পরিবার-স্বজনদের পাশাপাশি বিভ্রান্তিতে রয়েছেন বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মীরাও। বিশেষ করে, গুণী এই নেতার মৃত্যু আসলে কোথায় হয়েছে, দেশে না বিদেশে এনিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন খোদ বিএনপি নেতারাই।

তারা একে অপরকে ‘সত্য গোপন কথা, মিথ্যা’ বলে অভিযুক্ত করে। হরিশ পরিবার ও বিএনপি নেতাদের মধ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া হচ্ছে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি সূত্র দাবি করেছে, সবসময় ক্লিন সেইভে অভ্যস্ত হরিশ আত্মগোপনে যাওয়ার পর লম্বা সাদা দাড়ি রেখেছিলেন। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ছাড়াও দলের অনেক নেতাকর্মী ও জঙ্গিদের সঙ্গেও তার যোগাযোগ ছিল। এখন কেউ তাকে নিয়ে কথা বলে না, যেহেতু সে মোস্ট ওয়ান্টেড আসামি।

কানাইঘাটের কেউ কেউ বলছেন, গত সেপ্টেম্বরে ঢাকার পান্থপথের একটি কবরস্থানে হরিশ পরিবারের একজনকে দাফন করা হয়েছে বলে তারা শুনেছেন। কয়েকদিন পর হারিছের ছোট ভাই এমরান হোসেন চৌধুরী সেলিম মারা গেলে তাকে দাফনের জন্য কানাইঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ঢাকায় দাফন করা লাশটি পরীক্ষা করতে হবে।

এদিকে ‘মৃত্যু’র খবর ফাঁস হওয়ার পর সিলেট-বিলেটে টেলিফোনে কথাবার্তা চলছে। বিরোধীরা মনে করছেন এটা বিএনপির দুর্নীতিবাজ রাজনীতির অংশ এবং পরিকল্পিত গুজব।

এ বিষয়ে আবারও কথা বলেছেন সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক কানাইঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ও হারিছের চাচাতো ভাই আশিক উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, আমি হারিছ চৌধুরী পরিবারের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সোর্স। আমি বারবার বলেছি যে তিনি লন্ডনে মারা গেছেন এবং সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের প্রেসিডেন্ট এম এ মালেক যখন দাবি করছেন তিনি ঢাকায় মারা গেছেন এবং ঢাকায় তাকে দাফন করা হয়েছে। জানাজা ও দাফনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির প্রবাসী নেতা। মালেকের এসব কথা সত্য নয়, মিথ্যা। আমাদের পরিবার সম্পর্কে আমার চেয়ে বেশি কেউ জানবে না।

তবে হারিছ চৌধুরীর স্ত্রী জোসনা আরা চৌধুরী, তার ছেলে পেট্রোলিয়াম প্রকৌশলী নাঈম শফি চৌধুরী, জনি ও তার মেয়ে আইনজীবী সামিরা তানজিন চৌধুরী টেলিফোনে সাহায্য চাইলে অপারগতা প্রকাশ করেন। আশিক উদ্দিন চৌধুরী জানান, তার বড় ভাই হারিছ মারা যাওয়ার পর ঢাকায় থাকা তার ছোট ভাই সেলিম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এত ঝড়ের পরও আমাদের পরিবারের সাথে হারার খেলা থামে না।

প্রশ্ন জাগে, আমরা আর কত হয়রানি, নির্যাতনের শিকার হব?

সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাহের চৌধুরী শামীমকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে যে হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন এবং তাকে দাফন করা হয়েছে, তবে তিনি এমন কোনো বক্তব্য দেননি।

এদিকে বিএনপি সভাপতি বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর ‘মৃত্যু’ নিয়ে ভিন্ন কথা বলছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক।

তিনি দাবি করেন, ১১/১১-এর পর হারিছ চৌধুরী আর লন্ডনে যাননি। তিনি দেশে ঢাকায় ছিলেন এবং সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়। আমি ভালো করেই জানি যে তিনি ঢাকায় থাকতেন। কারণ তিনি ঢাকায় তার বড় বোনের বাসায় থাকতেন। মাঝে মাঝে অন্য ভাইদের বাড়িতে থাকতেন। ওয়ান-ইলেভেনের মৃত্যুর পর থেকে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে হারিছের আর কোনো যোগাযোগ নেই বলেও দাবি করেন ওই নেতা।

এম এ মালেক বলেছেন, হারিছ চৌধুরীর এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। যুক্তরাজ্য বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, তার (হারিশ চৌধুরী) সঙ্গে তার পারিবারিক, ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক যোগাযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে ছেলে ও পুত্রবধূর সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। কথা হলো, ওয়ান ইলেভেনের পর তিনি আর লন্ডনে আসেননি। ঢাকায় তিনি মারা যান। এটা সত্য, আমি খুব ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানি. তাকে ঢাকায় দাফন করা হয়।

লন্ডন বাংলা ভয়েসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এম এ মালেক হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন বলে দাবি করেন এবং তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

হারিছ চৌধুরী কোনো শোক কর্মসূচি পালন করছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার বলেন, আমরা কোনো দুঃখ প্রকাশ করতে পারছি না, মৃত্যু তারিখ ও শোকস্থল অনিশ্চিত। অযথা খোঁজার দরকার নেই, কোন নির্দেশনা পেলে কি করা যায় দেখব। কিন্তু হারিছ চৌধুরী ঢাকা বা লন্ডন যেখানেই মারা গেছেন, সেটাই সত্য বলে মনে হয়। কারণ হরিশের কাজিন আমাকে এটা নিশ্চিত করেছে।

সিলেট মহানগর বিএনপির সমন্বয়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পুঙ্কি জানান, বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর মতো হারিছ চৌধুরীও দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তার মৃত্যুর খবর প্রচারিত হলেও কবে কোথায় কেউ বলতে পারছে না। এ অবস্থায় সাংগঠনিকভাবে কিছু করার সুযোগ কোথায়?

সিলেটের একাধিক বিএনপি নেতা তাদের নাম প্রকাশ না করে জোর দিয়ে বলেছেন যে তাদের চাচাতো ভাই আশিক চৌধুরী হারিছ পরিবারের সম্পর্কে সব জানেন। বাইরে থেকে কেউ এত কিছু জানবে না। যাইহোক, আপনি একটি গোপন বা মিথ্যা বক্তব্য দিচ্ছেন কিনা তা খুঁজে বের করা গুরুত্বপূর্ণ। তার দৃঢ় বিশ্বাস সব কথার শেষ কথা আশিকের মুখেই পাওয়া যাবে। অন্য কারো কাছে নয়। এই ‘মৃত্যু’ নিয়ে বিএনপি পরিবারের কিছু সদস্য এখনও সন্দিহান। তারা তাদের নাম প্রকাশ না করে বলে, আমি পারতাম

এদিকে এর আগেই বিএনপি নেতা হারিছের প্রবাসী কন্যা ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী দাবি করেছেন, তারা বাবা লন্ডণে নয়, বরং দেশের মাটিতেই তার মৃত্যু হয়েছে। এমনকি নিজের বাবার শেষ গোসল ও জানাজার সময়েও তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলেও দাবি করেন সামিরা

About

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *