Friday , November 15 2024
Breaking News
Home / National / তারা কী ভেবেছিল, কী করতে চাচ্ছিলো, সেই প্রশ্নের উত্তর আজও পাইনি : প্রধানমন্ত্রী

তারা কী ভেবেছিল, কী করতে চাচ্ছিলো, সেই প্রশ্নের উত্তর আজও পাইনি : প্রধানমন্ত্রী

জীবনের মায়া ত্যাগ করে যারা এ দেশের জন্য আজীবন লড়ে গেছেন তাদের মধ্যে একজন বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মানব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার আত্মত্যাগের কথা কখনও ভুলবে না এ বাংলার মানুষ। বঙ্গবন্ধুকে হারানোর এতগুলো বছর পেরিয়ে গলেও এখনও যেন প্রতিটি মানুষের অন্তরে বেঁছে আছেন তিনি। আর এদিকে এবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে মারার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ দেশের মানুষের জন্য যে মানুষটার বুকভরা ভালোবাসা ছিল, যে মানুষগুলো আমাদের ঘরে বসে খেয়ে পরে গেলো, তারা কীভাবে ওই বুকে গুলি চালায়? বাংলাদেশের মাটি অনেক উর্বর। এখানে যেমন অনেক ভালো মানুষ জন্মে, তেমনি পরগাছাও জন্ম নেয়। তেমন বেইমান পরগাছাও এ দেশে ছিল। তাদের ইচ্ছা ছিল এ দেশ যেন উন্নতি করতে না পারে। এরা মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়েছিল।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত থেকে সভাপতিত্ব করেন। আলোচনা সভায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সম্পাদক ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বঙ্গবন্ধু হ’ত্যার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাহাত্তরে বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার পর থেকেই কিছু কিছু লোকের শুরু হলো নানা ধরনের সমালোচনা। এটা হলো না, ওটা হলো না। এই হচ্ছে না, সেই হচ্ছে না। একবারও তারা ভেবে দেখলো না, এই দেশটা ছিল পরাধীন। দুইশ বছর ব্রিটিশদের গোলামি করেছে। তারপর ২৩ বছর পাকিস্তানিদের গোলামি করতে হয়েছে। এরপর মুক্তিযুদ্ধ করতে হয়েছে। পাকিস্তানের একটি প্রদেশকে যিনি রাষ্ট্রে উন্নীত করেছেন, ধীরে ধীরে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তাকে সময় দেওয়া হলো না। যারা সেই সময় এরকম কলাম লিখেছেন, আন্দোলন বা বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নামে এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল, তারা কী ভেবেছিল? কী করতে চাচ্ছিলো তারা? সেটাই আমার প্রশ্ন। সেই প্রশ্নের উত্তর আজও পাইনি।

স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ভুট্টো নিজের চামড়া বাঁচাতে এবং বাংলাদেশে আটকে পড়া ৯৬ হাজার পাকিস্তানিকে ফেরত নিতে ও আন্তর্জাতিক চাপে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশে ফিরে তিনি সবার আগে ফিরে যান দেশের মানুষের কাছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের দায়িত্ব নিয়ে পরিবর্তন শুরু করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে স্বল্পোন্নত দেশের স্বীকৃতি আদায় করে দেন। মানুষ ও দেশের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে এগুলো হতো না।

শেখ হাসিনা বলেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ও পাকিস্তান আধা ঔপনিবেশিক আমলের যে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, তা পরিবর্তন করে বাংলাদেশের গ্রামের তৃণমূলের মানুষের হাতে ক্ষমতার অধিকার দিতে চেয়েছিলেন। জনগণকে প্রজাতন্ত্রের মালিক করতে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি দিয়ে সেই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সার্বিক উন্নয়নকে কেন্দ্রীভূত না রেখে বিকেন্দ্রীকরণ করে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে চেয়েছিলেন। যেন বাংলাদেশ কারও মুখাপেক্ষী না হয়। দেশের মানুষ যেন বিশ্বের কাছে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। যখনই তিনি ঘুণে ধরা সমাজ ভেঙে নতুন সমাজ বিনির্মাণের পদক্ষেপ নেন, তখনই তাকে নির্মমভাবে হ’ত্যা করা হয়।

তবে একটি দেরি করে হলেও আজ তাকে হারানোর শূন্যতা টের পাচ্ছে পারছে এ বাংলার মানুষ। যিনি নিজের জীবনের কথা একটি বারের জন্যও না ভেবে মানুষের মুক্তি সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন, তার সাথেই এ ঘটনা যেন এখনও মেনে নিতে পারছে না কেউ। সর্বক্ষণই বঙ্গবন্ধুর খু’নিদের বিচার চায় বাংলার প্রতিটি মানুষ।

About

Check Also

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেন্টমার্টিন লিজ দেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকার সেন্টমার্টিন দ্বীপকে লিজ দিচ্ছে। তবে প্রধান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *