বিশেষ দিনগুলোকে স্মরণীয় করে রাখতে অনেক সময়ে নানা অবাক করা ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন কেউ কেউ। আর সেই ধারাবাহিকতায় এর ব্যতিক্রম হয়নি সৌদি প্রাবাসী সুজন ইব্রাহিমের বেলায়ও। অন্যান্য সময়ে যখন দেশে ফিরেছেন, সাধারণত তখন সড়ক পথকেই বেঁছে নিয়েছেন তিনি। তবে তার এবারের দেশযাত্রাটা ছিল সম্পূর্নই ভিন্ন। কিন্তু এর পেছনে ছিল বিশেষ একটি কারন।
তাই অন্যরকমভাবে দিনটি উদযাপন করলেন সৌদিপ্রবাসী সুজন ইব্রাহিম। বিবাহবার্ষিকী বলে কথা। ভালবাসার নিদর্শন দিতে স্ত্রীকে নিয়ে হেলিকপ্টারে উড়ে বাড়ি ফিরলেন তিনি। স্ত্রীকে সারপ্রাইজ দিতে এ আয়োজনটি করে রেখেছিলেন সুজন। আত্মীয়-স্বজন এবং এলাকাবাসীও বিষয়টি উপভোগ করে।
সপরিবারে সৌদি আরব থাকেন সুজন ইব্রাহিম। সেখানে সফল একজন ব্যবসায়ী তিনি। সুজন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে। স্ত্রী সাবেকুন্নাহারের বাড়িও করিমগঞ্জ উপজেলার নানশ্রী গ্রামে।
আজ মঙ্গলবার ছিল সুজন ইব্রাহিম ও সাবেকুন্নাহারের বিবাহবার্ষিকী। স্ত্রীকে আগেই বলে রেখেছিলেন, এ দিনটিতে তাঁর জন্য রয়েছে একটি চমক। সেই চমক দেখাতে পঞ্চম বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রীকে নিয়ে হেলিকপ্টারে বাড়ি ফিরলেন তিনি।
বেলা ১২টার দিকে তাঁদের বহন করা হেলিকপ্টারটি করিমগঞ্জ সদরের হেলিপ্যাডের মাটি স্পর্শ করে। সঙ্গে ছিল এই দম্পতির দুই সন্তানও। এই আয়োজনের কথা স্থানীয়রা আগেই জানত। তাই সকাল থেকে হেলিপ্যাডে ছিল গ্রামবাসীর ভিড়। এ সময় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তাদের ফুলেল সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাদের গাড়ির সামনে পিছে শতাধিক মোটরসাইকেলের শোভাযাত্রাসহ বাড়ি ফিরেন এ সৌদিপ্রবাসী। এ দৃশ্য দেখতে রাস্তার দুপাশে শত শত মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে হেলিকপ্টার থেকে নেমে সুজন ইব্রাহিম বলেন, ‘মূলত এলাকাবাসীর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের জন্য বাড়ি ফিরেছি। সঙ্গে বিবাহবার্ষিকী উদযাপনের বিষয়টিও মাথায় ছিল। আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসীকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। সবাই মিলেমিশে একটু আনন্দ করব আরকি।’
সুজনের ছোটভাই মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘সৌদি আরবে তাঁদের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার নাম টাইম কম্পানি লিমিটেড। তাছাড়া সেখানে তাদের আরো কিছু উদ্যোগ রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সুজন ইব্রাহিম। করোনার সময় তাদের প্রতিষ্ঠান চাকরি চলে যাওয়া বেকার বাংলাদেশি সৌদি প্রবাসীদের চাকরির ব্যবসাসহ নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। সৌদি প্রবাসি ভাইদের সাহায্য-সহযোগিতা করা তাদের প্রতিষ্ঠানের অন্যতম কাজ।’ এবার তাঁর ভাই নিজ এলাকার উন্নয়ন ও মানুষের জন্য উদ্যোগ নেবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে গোটা পরিবারকে নিয়ে সুজনের এবারের দেশযাত্রায় রীতিমতো অবাক হয়েছেন সকলেই। এমনকি তাদের এ আগমনে রীতিমতো খুশি সুজনের বাবা-চাচাও। এ ব্যাপারে তারা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ছেলে, বউমার ও নাতি-নাতনির আগমনে শুধু তারাই খুশি হননি, রবং এলাকাবাসীও অনেক খুশি হয়েছেন।