দুর্নীতি-অনিয়ম প্রতিরোধের শপথ নিয়েও আজ সেই দুর্নীতিতেই জড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের। আর এই তালিকায় রয়েছেন বরখাস্তকৃত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের উপ-মহাপরিদর্শক পার্থ গোপাল বণিকও। ঘুষ কেলেঙ্কারিসহ ক্ষমতার অপব্যহার করে নানা দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে লাখ লাখা টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলার আলোকে পার্থ গোপালের বিরুদ্ধে পৃথক চার ধারায় চার্জ গঠন করেছিলেন আদালত।
দুদক আইনের পৃথক দুই ধারায় তাকে ৮ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে, ঘুষ গ্রহণ ও অর্থপাচারের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে দুই ধারায় খালাস দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৯ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ আদেশ দেন।
এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন,‘পার্থ গোপাল বণিকের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও ঘুষের অভিযোগ আনা হয়েছিল। মানিলন্ডারিং ও ঘুষের ব্যাপারে আমরা সাক্ষ্য দেইনি। আমরা বলেছি যে, তিনি ঘুষের মাধ্যমে আয় করেছেন। ঘুষ ও অবৈধ উপার্জনটা পাশাপাশি কোনো না কোনো সোর্সের মাধ্যমে হয়। কেউ তাকে সরাসরি ঘুষ দিয়েছেন, এরকম সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় আদালত তাকে খালাস দিয়েছেন। তার বাড়িতে যে টাকা পাওয়া গেছে, সে সম্পর্কে আমরা বলেছিলাম, এসব অর্থ পাচারের উদ্দেশ্যে রেখেছেন তিনি। কোথায় পাচার করবে বা কিভাবে পাচার করবে, সে সম্পর্কে সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় কারণে হয়তো তিনি খালাস পেয়েছেন।’
পার্থ গোপাল বণিকের আইনজীবী এহেসানুল হক সমাজী বলেছেন, ‘সাবেক ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপাল বণিকের বিরুদ্ধে দুদক যে মামলাটি করেছিল, সেই মামলায় বিজ্ঞ বিচারিক আদালত এ আসামির বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ও ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারা এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে চার্জ গঠন করেছিলেন। এর পর ১২ সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামির বিরুদ্ধে পৃথক চার ধারার মধ্যে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে আদালত বলেছেন, প্রসিকিউশন পক্ষ এ দুই ধারার চার্জ প্রমাণ করতে পারেনি। দুদক আইনের দুটো ধারায় অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন তারা। সেই মোতাবেক আদালত এক ধারায় ৫ বছর এবং আরেক ধারায় তিন বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।’
এদিকে পার্থ গোপালের বিরুদ্ধে দায়ের করা ঐ মামলার অভিযোগপত্রে জানানো জানানো হয়, দায়িত্বে থাকা-কালীন নানা দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন পার্থ, আর এরই ধারাবাহিকতায় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বাসায় নগদ টাকাসহ গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাকে। এই মামলায় এরই মধ্যে তাকে ৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।