ঢাকাই সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী অনিক রহমান অভি। অল্পতে ‘অভি’ নামেই চিনে থাকেন সকলেই। তিনি চিত্রনায়িকা পপির বিপরীতে ‘সাহসী যোদ্ধা’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌছে যান। এমনকি এতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও লাভ করেন তিনি। তবে হঠাৎ করেই গত ৯ মাস ধরে রীতিমতো উধাও এই অভিনেতা। ফোন বন্ধ। সমিতির চাঁদাও দেন না। যোগাযোগ করে কোনো খবরই পাচ্ছিলেন না। তার বিষয়টা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলেন। কিন্তু পিরোজপুরে থাকার সময় জায়েদ খানের মোবাইলে হঠাৎ করে একটি ফোন আসে, ও প্রান্ত থেকে বলে, ‘ভাই আমি অভি, ভাই আমাকে আটকে রেখেছে ৯ মাস উদ্ধার করেন।’
সিনেমার মতোই গল্প শোনালেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। কালের কণ্ঠের সাথে আলাপকালে বললেন, ‘আসলে অভি এতোদিন কোথায় ছিল, আমরা খুঁজেছি পাইনি। ওর সমিতির চাঁদাও বাকি ছিল। আমি মা-বাবার কবর জিয়ারত করছিলাম। হঠাৎ করে একটি ফোন আসে। আমি সেই ফোন পেয়ে অবাক হয়ে যাই। অভি ফোন দিয়েছিল। কোথা থেকে ফোন দিয়েছিল জানি না। শুধু বলেছিল তাঁকে আটকে রেখে ৯ মাস ধরে যৌন নির্যাতন করে এক নারী। আরো অনেককেই নাকি আটকে ছিল।’
বুধবার সকালে জায়েদ খান একটি আবেদন পত্রের প্রতিলিপি পাঠিয়ে বলেন, ‘পরে আমি জানতে পারি গাজীপুর ভাওয়াল মাদকাসক্ত কেন্দ্রে অভিকে আটকে রাখা হয়েছে। র্যাবকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানাই। র্যাব অভিযান চালিয়ে গতকাল অভিসহ ২০ জনকে গাজীপুরের ওই মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করে। আমি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞ।’
অভিকে আটকে রেখে যৌন নির্যাতন চালানো হতো ফেসবুকেও এমনটা উল্লেখ করেছেন জায়েদ খান। তিনি পোস্টে বলেন, ‘চিত্রনায়ক অনিক রহমান অভি মাদকাসক্ত না হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘ ৯ মাস শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে শারীরিক যৌন নির্যাতন চালাতেন ঐ প্রতিষ্ঠানের মালিক এক নারী। বিষয়টি গোপন সূত্রের ভিত্তিতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব অভিযান চালিয়ে সেখানে চিত্রনায়ক অভি’সহ আর ২০ জন উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে সেই প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ অভিযান পরিচালনার সময় মাদকাসক্ত অবস্থায় ছিলেন!’
তবে র্যাব বলছে, অভি মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে তাঁকে ওই মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। র্যাব কর্মকর্তা মঈন বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা ২০ জনকে উদ্ধার করেছি। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁকেও মেডিক্যাল টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। তাঁকে এখানে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হতো, সে এখান থেকে বের হতে চাইতো তাঁকে বের হতে দিতো না। কিসের জন্য আটকে রাখা হয়েছিল, আমরা সেই বিষয়টিও দেখছি।’
বেশকিছু জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করেছেন অনিক রহমান অভি। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্য রয়েছে- ‘দুষ্টু ছেলে’, ‘ভালোবাসা ডটকম’, ‘চটপটি ভালোবাসা’, ইত্যাদি। তবে বেশ কিছুদিন ধরে অভিনয়ে তেমন একটা দেখা যায়নি তাকে। তবে ভক্তরা আশাবাদি, খুব শীঘ্রই আবারও অভিনয়ে দেখা যাবে তাকে।